ঘটনাটি ব্রাজিলের সাও পাওলোর। সেখানে ২৪ বছরের এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের নাম ওহানা ক্যারোলিন। তিনি সাত মাসের গর্ভবতী ছিলেন।
জানা গেছে, ভয়ঙ্করভাবে খুন করা হয়েছে তাকে। দেখে শিউরে উঠেছে পুলিশও। পেট চিরে ফেলা হয়েছে তার। পুলিশ মনে করছে, কোনও কুসংস্কার বা ভয়ঙ্কর প্রথার কারণেই এমন নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে তাকে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিন সন্তানের জননী ওহানা। চতুর্থ সন্তানের জন্ম দিতে চলেছিলেন তিনি। ছিলেন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
২১ সেপ্টেম্বর ব্রাজিলের সাও পাওলোর পোর্টাল ডস লাগোসে ওহানার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তার পেট এমনভাবে চিরে ফেলা হয়েছিল যে, ভিতরের সব অন্ত্র দেখা যাচ্ছিল।
কিন্তু ওহানার গর্ভস্থ সন্তান কোথায় গেল? তা নিয়ে মুখ খোলেনি পুলিশ।
ওহানার মৃতদেহের গায়ে জড়ানো ছিল একটা টিশার্ট। নিম্নাঙ্গ অনাবৃত ছিল। মরদেহের পাশে ছড়ানো ছিল স্থানীয় কিছু মুদ্রা, রক্তে ভেজা ওহানার হাফ প্যান্ট ও জুতা।
যে জায়গায় ওহানার মৃতদেহ পাওয়া গেছে, তা সন্দেহ বাড়িয়েছে পুলিশের। ওই এলাকায় বেশ কিছু গির্জা রয়েছে। সেই গির্জায় ভিন্ন মতবাদের চর্চা হয়। পুলিশ মনে করছে, ‘ম্যাকাব্র প্রথা’র বলি হয়েছেন ওহানা।
ওহানার মরদেহ মিলেছে জঙ্গলে। যে জায়গায় লাশ মিলেছে, সেই খোলা জায়গায় প্রার্থনা করেন বিভিন্ন মতাবলম্বী মানুষ। স্থানীয়দের দাবি, ওই জায়গা কুসংস্কারের আখড়া। অনেক বেআইনি কাজও নাকি হয় সেখানে।
ওহানার সাবেক স্বামী এসে তার মরদেহ শনাক্ত করেন। তিনিই তার তিন সন্তানের বাবা। কয়েক মাস আগে তার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছে ওহানার। তার পর থেকে তিন সন্তানকে নিয়ে আলাদা থাকতেন ওহানা।
বিচ্ছেদের পর নতুন সম্পর্কে জড়িয়েছেন ওহানা। তার বর্তমান প্রেমিককেও জেরা করেছে পুলিশ। কিন্তু প্রাথমিকভাবে তাকে সন্দেহভাজনের তালিকায় রাখা হয়নি।
ওহানার এক বন্ধু বলেন, “ও খুব মিষ্টি মেয়ে ছিল। কিন্তু সম্প্রতি একটি খারাপ দলের পাল্লায় পড়েছিল। তাই আমি ওঁর সঙ্গে দূরত্ব রেখে চলছিলাম।” এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে চাননি তিনি।
আরেক বন্ধু জানিযেছেন, মৃত্যুর দিন ওহানাকে একটি কালো গাড়িতে দেখেছিলেন তিনি।
আরও কয়েক জন প্রত্যক্ষদর্শীও একই কথা জানিয়েছেন। সকলেই প্রায় একযোগে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন রাত তিনটার দিকে ওই কালো গাড়িতে ওহানাকে দেখেছিলেন তারা। দেখেছিলেন ওই জঙ্গলেরই আশেপাশে।
ঠিক কী অস্ত্র দিয়ে ওহানার পেট চিরে ফেলা হয়েছিল, তা এখনও জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে তা জানা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই ‘ম্যাকাব্র প্রথা’ আসলে কী? মূলত কুসংস্কারের ফাঁদে পড়ে অনেক সময় কাউকে খুন। অনেক সময়ই ভয়ঙ্করভাবে খুন করা হয়। তারপর সেই মরদেহের পরিণতিও হয় ভয়ঙ্কর। এখনও কয়েকটি জনজাতি রয়েছে, যারা মৃতদেহ খেয়ে ফেলে। কেউ আবার মৃতদেহ কেটে পাখিকে খেতে দেয়। কেউ আবার মরদেহ নিয়ে ‘কালো জাদু’ চর্চা করে। আর এই সব প্রথার নেপথ্যে থাকে মৃত্যুভয়। এরা চায়, মৃত্যু যেন কোনওভাবেই তাদের ছুঁতে না পারে।
ব্রাজিল পুলিশ মনে করছে, ওহানার মৃত্যুর নেপথ্যেও রয়েছে এ রকমই কিছু অদ্ভুত প্রথা বা চর্চা। তবে বিষয়টি নিয়ে তারা বিস্তারিত কিছু বলতে চায়নি।