পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বৃহস্পতিবার। তবে ভোটগ্রহণ শেষ হলেও সরকার গঠন নিয়ে শুরু হয়েছে নানা নাটকীয়তা। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনো রাজনৈতিক দল। বরং রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। খবর রয়টার্সের।
জোট সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন নওয়াজ শরিফ
পার্লামেন্টে মাত্র ৭৫ আসন পেয়েছে নওয়াজের দল পিএমএল-এন। ফলে জোট সরকার গঠন করতে ভুট্টোর দল পিপিপির সঙ্গে এক চুক্তি করেছে তারা। অন্য ছোট দলগুলোকেও তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর, এই জোটই সরকার গঠন করে, যেখানে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর শেহবাজ শরিফ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
সেনাবাহিনীর পদক্ষেপ
শেষ পর্যন্ত যদি কোনো দলই সরকার গঠন করতে না পারে, তা হলে ক্ষমতার দখল নিতে পারে সেনাবাহিনী। এমনিতেই পাকিস্তানে শক্তিশালী সেনাবাহিনী। রাজনীতিতে তাদের প্রভাব ও কর্তৃত্ব সবচেয়ে বেশি। পাকিস্তানের ৭৬ বছরের ইতিহাসে তিনবার ক্ষমতার দখল নিয়েছে সেনাবাহিনী। সবশেষ ১৯৯৯ সালে নওয়াজ শরিফকে উৎখাত করে, ক্ষমতার দখল নেয় তারা। এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে বিভেদকে ভুলে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন সেনাপ্রধান।
অন্য দলে যোগ দিতে হবে স্বতন্ত্রদের
নির্বাচনে ইমরান খানের দল-পিটিআইসমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ১০১ আসন। তবে সরকার গঠন করতে হলে তাদের আগে কোনো একটা দলে যোগ দিতে হবে। তা হলেই তার সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ পাবেন। আর তার পর, অন্য কোনো দলকে সঙ্গে নিয়ে জোট গঠন করতে হবে।
ইমরান খান যেহেতু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য নন, তাই যদি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অন্য দলে যোগ দেওয়ার চুক্তি করে, তখন তারা কারাবন্দি ইমরানকে মুক্ত করতে চাপ দিতে পারবে।
পিপিপি ছাড়া জোট অসম্ভব
পিএমএল-এন ও পিটিআইসমর্থিত স্বতন্ত্ররা বেশি আসন পেলেও, কোনো দলই পিপিপি ছাড়া জোট সরকার গঠন করতে পারবে না। এটিই হলো পিপিপির তুরুপের তাস। তাই সমর্থনের জন্য বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব দিয়েছেন তার বাবা আসিফ আলি জারদারি।
পাকিস্তানের জন্য নতুন তরুণ নেতৃত্ব প্রয়োজন উল্লেখ করে ভোটের আগেই এমন প্রস্তাব করেছিলেন তিনি।
পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ৩৩৬ আসনের মধ্যে সরাসরি নির্বাচন হয় ২৬৬ আসনে। বাকি ৭০টির মধ্যে নারীদের জন্য সংরক্ষিত ৬০ ও সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত ১০ আসন।
তিন প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হয়েছিল ২৬৩ আসনে।
পাকিস্তানের এবারের নির্বাচনে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদন বলছে, ইমরান খান সমর্থিত পিটিআই প্রধান ইমরান খান সমর্থিত স্বতন্ত্ররা ১০১ আসন, মুসলিম লিগ ৭৫ আসন, পিপিপি ৫৪ আসন, জেইউআই ৪ আসন, এমকিউএম ১৭, বিএনপি ২ আসন ও পিএমএল কিউ ৩ আসনে জয়ী হয়েছে।