সভ্যতার নামে মানুষ আস্তে আস্তে কোথায় নেমে যাচ্ছে! সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে এ প্রশ্নটি মাথায় আসছে। জীবনকে উপভোগ করার নামে, আনন্দ করার নামে নিজের সর্বোচ্চ সম্পদ সম্ভ্রমকে সবার সামনে উন্মুক্ত করে তুলে ধরছে মানুষ। বুদ্ধিমান জীব হিসেবে এমনটা মানুষের কাছে প্রত্যাশা করে না পৃথিবী। সম্প্রতি দেখা গেছে পোশাকবিহীন পুরো উদোম শরীরে অবকাশ যাপন বা ছুটি কাটানো বা হানিমুন করার রীতি পশ্চিমা দুনিয়ায় জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। মানুষ পুরোপুরি নগ্ন হয়ে হানিমুন করছে। বাইক রাইড দিচ্ছে। এমনকি পোশাকবিহীন ফেস্টিভাল পালন করছে। সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে মার্কেটে কেনাকাটা করছে যুবক-যুবতী। সব মানুষ এই ধারাকে অনুসরণ করছে না। তবে এই রীতির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ জন্য বৃটেন ও এর বাইরে এমন নগ্ন পর্যটন শিল্প গড়ে উঠেছে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মানুষ তাদের স্পটে চলে যাচ্ছে পোশাকমুক্ত হয়ে। এসব যারা করছেন তাদের যুক্তি অন্যরকম। কেউ বলছেন, পরিবেশবান্ধব হয়ে তারা এটা করছেন। কেউ বলছেন, শরীরের শিল্পকে বিকশিত করার জন্য এটা করছেন। কেউ বলছেন, শরীরের প্রতি মর্যাদা প্রদর্শনের জন্য তারা এসব করছেন।
স্পেনে প্রকৃতিবাদীরা সমুদ্র সৈকতে পোশাকবিহীন বিচরণ করেন। সেখানে এমন একটি জোন বা এলাকা হলো ভেরা প্লেয়া ন্যাচারিস্ট জোন। এখানে সারা বছরই নগ্ন পোশাকে বিচরণ করেন যুবক-যুবতী। ভ্রমণ বিষয়ক এমন একটি ওয়েবসাইট হলো ডিজায়ার এক্সপেরিয়েন্স। এর পুরোটাই বৃটিশদের জন্য, যারা এই গ্রীষ্মে নগ্ন শরীরে অবকাশ যাপন করতে চান। এতে বর্ণনা করা হয়েছে, প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য হলিডে, যেখানে আপনি ইচ্ছে করলেই নগ্ন হতে পারেন। আছে নগ্ন রিসোর্ট এবং ক্রুজ।
এক যুগল সম্প্রতি পুরো নগ্ন হয়ে ‘নুডিস্ট সিটি’তে তাদের রোমান্টিক হানিমুন পালন করেছেন। এই শহরটির নাম ক্যাপ ডি’অ্যাজে। ফরাসি এই শহরে ভূমধ্যসাগরের উপকূলে। সেখানে পর্যটকরা পুরো নগ্ন হয়ে বিচরণ করতে পারেন। কেনাকাটা করতে পারেন। সেখানে এমন হানিমুন বেছে নেন আর্থার ও উরসো এবং লুয়ানা কাজাকি। তাদের কাছে এটা হলো নগ্ন হানিমুন করার এক নম্বর জায়গা। তারা বলেছেন, বিয়ের পর নব দম্পতির ভিন্ন রকম এক নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করা উচিত। উল্লেখ্য, ক্যাপ ডি’অ্যাজে শহরটি নগ্নতায় উদার। এক্ষেত্রে কোনো বাধাধরা নিয়ম নেই। কিন্তু সেখানে প্রকাশ্যে যৌনতায় লিপ্ত হওয়া নিষিদ্ধ। এমন কর্মকাণ্ডে কাউকে লিপ্ত দেখা গেলে তাকে ১৫ হাজার ইউরো পর্যান্ত জরিমানার বিধান আছে।
সম্প্রতি জন ও’গোয়েটস থেকে ল্যান্ডস এন্ড পর্যন্ত নগ্ন সাইক্লিং অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন কলিন উনসোয়ার্থ (৫২) ও তার পার্টনার স্যাডি টান (৩২)। তারা যখন এ কাজ করেন, তখন তাদেরকে করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানান অন্যরা। মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক দাতব্য সংস্থা মাইন্ড অ্যান্ড রিউইর্ল্ডি বৃটেনের জন্য অর্থ সংগ্রহের জন্য তারা দিনে ৫০ মাইল সাইকেল আরোহন করেন। এ ছাড়া নো ক্লোথস ফেস্টিভাল তো আছেই। এর নাম দেয়া হয়েছে ন্যুডফেস্ট। লন্ডনে এই ফেস্টিভ্যালের সবচেয়ে বড় আয়োজন হয় সমারসেটে। সেখানে এবার ৬০০ মানুষ অংশ নিয়েছেন এক সপ্তাহের জন্য। এ সময় তারা নানা ধরনের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন। এর মধ্য দিয়ে তারা শরীরের পজেটিভ দিকগুলোকে তুলে ধরেন। এর অনুসারীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৪০০।