সব ধরনের গম রফতানি নিষিদ্ধ করল ভারত। শুক্রবার রাতে এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেয় ভারত সরকার। আজ শনিবার থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। তবে ইতোমধ্যে ইস্যু করা লেটার্স অব ক্রেডিটের (এলসি) আওতায় গমের চালানগুলোকে ছাড়ের অনুমতি দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, ইউক্রেন-রাশিয়ার পর বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ খাদ্যশস্য রফতানিকারক দেশ ভারত। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর খাদ্যশস্য খাতে সৃষ্ট শূন্যতা পূরণে অনেকেই ভারতের ওপরই নির্ভর করতে শুরু করেছিল। এই সুযোগে ভারতও চেয়েছিল গম রফতানি করে বিশ্ব বাজারে নিজের নাম প্রতিষ্ঠা করতে। তবে এরই মাঝে দেশটিতে তলানিতে গিয়ে ঠেকে গম উৎপাদন। ফলে খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে গম রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল ভারত সরকার। পিটিআই সূত্রে খবর, অবিলম্বে আজ শনিবার থেকেই গম রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার ভারত।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্চের মাঝামাঝি সময়ে ভারতজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ দেখা দিয়েছিল। এর কারণে ভারতে গমের উৎপাদন হ্রাস পায়। এর জেরে গমের দাম রেকর্ড মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এপ্রিলে গমের দাম ৬.৯৫% বেড়েছে। এরপরই শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, ভারতকে আগামী দিনে গম রফতানি বন্ধ করতে হতে পারে। সেই আশঙ্কা সত্য প্রমাণ করে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল, এখন থেকে আর গম রফতানি করা যাবে না।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, প্রায় ৮০ কোটি ভারতীয়র ভর্তুকিযুক্ত খাদ্য বিতরণের জন্য সরকারের নূন্যতম ৩০.৫ মিলিয়ন টন গম প্রয়োজন। তার পাশাপাশি অন্যান্য কল্যাণ প্রকল্পের জন্য গম লাগবে দেশটির। এই পরিস্থিতিতে গম রফতানি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত।
ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে গোটা বিশ্বে গমের চাহিদা বেড়েছে। মূলত রাশিয়া ও ইউক্রেন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ দুই গম রফতানিকারক দেশ। তবে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বহু দেশ। আবার ইউক্রেনে যুদ্ধ চলায় গম রফতানি করতে পারছে না সেই দেশ। এই পরিস্থিতিতে ভারত শূন্য স্থান পূরণের লক্ষ্যে নেমেছিল। ভারত ২০২২-২৩ সালে রেকর্ড ১০ মিলিয়ন টন গম রফতানির লক্ষ্য নির্ধারণ করে। গম রফতানি বাড়ানোর চেষ্টায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মরক্কো, তিউনিসিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, তুরস্ক, আলজেরিয়া এবং লেবাননে একটি বাণিজ্য প্রতিনিধি দল পাঠাবে বলে জানিয়েছিল বৃহস্পতিবারই। তবে আপাতত ‘গম কূটনীতি’ জারি থাকলেও তা রফতানি বন্ধ থাকছে।