ভয়াবহ শৈত্যঝড়ের কবলে পড়েছে আমেরিকা। দেশটির বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে আছড়ে পড়ছে তুষারঝড়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে দেশটির কমপক্ষে ২০ কোটি নাগরিক। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে, তুষার ঝড়ের কারণে আমেরিকার প্রায় ১৫ লাখ বাড়িতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয় শুক্রবার। বেশ কয়েকটি এলাকায় ঘণ্টা চারেক পর বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হলেও এখনও আমেরিকার অনেক বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে কার্যত অন্ধকারে ডুবে রয়েছে আমেরিকার একাংশ। তীব্র তুষারঝড়ের কারণে বন্ধ হয়েছে একাধিক সড়ক। ঝড়ের কারণে বাতিল হয়েছে কয়েক হাজার ফ্লাইট।
বিবিসি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টেক্সাস থেকে কুইবেক পর্যন্ত ৩,২০০ কিলোমিটার জুড়ে চলছে তীব্র এই তুষার ঝড়। হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা বাতাসে চরম দুর্ভোগে পড়েছে এই জনপদের মানুষ।
এলক পার্ক, মন্টানার তাপমাত্রা এরই মধ্যে মাইনাস ৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (মাইনাস ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এ নেমে গেছে বলে দাবি করা হয়েছে বিবিসির ওই প্রতিবেদনে। এচাড়াও মিশিগানের হেল শহরটি বরফে জমে গেছে বলে জানা গেছে।
আমেরিকার আবহাওয়া দফতর ‘ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস’ অনুযায়ী, আমেরিকার জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ অর্থাৎ, প্রায় ২৪ কোটি মানুষকে আবহাওয়ার চরম পরিবর্তন সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছিল।
উত্তর ও দক্ষিণ ডাকোটা, ওকলাহোমা, আইওয়া-সহ আরও বেশ কয়েকটি এলাকার প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে ঘর থেকে না বেরনোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আবহবিদরা জানিয়েছিলেন, শুক্রবার আমেরিকায় শৈত্যঝড় ‘বম্ব সাইক্লোন’-এ পরিণত হতে পারে। এর ফলে তীব্র বেগে বইবে ঠাণ্ডা বাতাস। বায়ুর চাপ থাকবে অনেক কম। হয়েছে-ও তাই। মিনিয়াপোলিস, শিকাগো এবং উত্তর ও পশ্চিম মিশিগানে তুষারঝড় শুরু হয়েছে।
দেশটির হাওয়া অফিস জানিয়েছে, সপ্তাহান্তে আমেরিকাবাসীকে আরও বিপাকে ফেলতে পারে তুষারঝড়ের ফলে হওয়া ‘ফ্রস্টবাইট’। তাপমাত্রা অত্যন্ত কমে গেলে রক্ত চলাচল কমে যায়। উষ্ণ রক্তের অভাবে দেহের ওই অংশ ঠাণ্ডা হয়ে জমে যায়। ফলে নাক, গাল, হাত, পায়ের আঙুলে ক্ষত তৈরি হয়। একেই ‘ফ্রস্টবাইট’ বলে।