শীতের সকালে রেললাইনে বসে রোদ পোহাচ্ছিলেন কয়েকজন নারী। হঠাৎ তাদের চোখে পড়ে, রেললাইন বেঁকে যাচ্ছে। সেখান থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে।
দ্রুত বাড়িতে গিয়ে বালতিতে পানি নিয়ে আসতে আসতেই দেখা যায়, ট্রেন চলে আসছে। বিপদ বুঝে তখন শাড়ির আঁচল নাড়াতে শুরু করেন ওই নারীরা।
ওই সময় খানিকটা দূরেই রেললাইন পরীক্ষার কাজ করছিলেন রেলকর্মীরা। নারীদের চিৎকারে তারা ছুটে এসে লাল কাপড় নাড়াতে থাকেন। ওই জায়গার কিছুটা আগে ব্রেক কষে ট্রেন থেমে যায়।
ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার চেঙ্গাইল স্টেশনের কাছে শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয়রা বলছেন, নারীরা তৎপর না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
থেমে যাওয়া ডাউন মেচেদা-হাওড়া লোকালের যাত্রীরাও একই কথা বলেছেন। রেলের কর্মকর্তারা অবশ্য নারীদের কৃতিত্ব মানতে চাননি। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা আদিত্য চৌধুরী বলেন, রেললাইন মেরামতের সময় একটা সমস্যা হয়েছিল। তার জন্য বেশ কিছুক্ষণ ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। লাইন মেরামতের পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। কেন এই ঘটনা ঘটল, তদন্ত করা হবে।
রেল কর্মকর্তারা যা-ই বলুন, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ঊষা পাত্র, মিতা পাত্রদের বক্তব্য, প্রতিদিন লাইন পরীক্ষা করেন রেলকর্মীরা। ওই দিনও করছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ডাউন মেদিনীপুর-হাওড়া গ্যালপিং লোকাল বেরিয়ে যাওয়ার পরই ওই ঘটনা ঘটে।
সেই নারীদের দাবি, লাইন বেঁকে গিয়েছিল। ধোঁয়া দেখে বাড়ি থেকে বালতিতে করে পানি এনে লাইনে ঢালতে থাকি। চিৎকার করে রেলকর্মীদের ডাকতে থাকি। এর মধ্যেই দেখি, ট্রেন ঢুকছে। তখনই শাড়ির আঁচল দেখাতে শুরু করি। রেলকর্মীরাও ছুটে এসে লাল কাপড় নাড়াতে থাকেন।
ঘটনার জেরে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে ট্রেন থেকে নেমে পড়েন। তপন সরকার নামে এক যাত্রী বলেন, তাদের সবার জন্য রক্ষা পেলাম।
ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে এক রেলকর্মী জানান, নারীদের চিৎকার শুনে তারা ছুটে আসেন। বিপদ বুঝে লাল কাপড় নাড়াতে থাকেন। প্রায় ৫০ মিটার আগে ট্রেন দাঁড়িয়ে যায়।