তৃতীয়বারের মতো ব্রাজিলের প্রেসিডিন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন বামপন্থি নেতা লুলা দ্য সিলভা। শপথবাক্যে তিনি নিজ দেশ ও বিশ্বের বৃহত্তম রেইন ফরেস্ট অ্যামাজনকে বাঁচানোর অঙ্গীকার করেছেন।
এর আগে ২০০৩ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ছিলেন লুলা। বলসোনারোকে হারিয়ে এবার তৃতীয়বারের জন্য প্রেসিডেন্ট হলেন ৭৭ বছর বয়সী এ বামপন্থি নেতা।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর তিনি বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো ব্রাজিলকে অধপতনের দিকে নিয়ে গেছেন। এমনকি বলসোনারো অ্যামাজন বন কেটে ফেলার পক্ষে ছিলেন, কিন্তু আমি তার ঘোরবিরোধী। এখন আমার কাজ হলো, ব্রাজিলকে বাঁচানো ও অ্যামাজনকে রক্ষা করা।
তিনি আরও বলেন, আমি দেশের সংবিধানকে মেনে চলবো ও রক্ষা করবো। তিন কোটি ৩০ লাখ মানুষকে ক্ষুধার হাত থেকে বাঁচাবো। ১০ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যসীমার ওপরে তুলবো। বলসোনারোর বানানো ধ্বংসস্তূপ থেকে ব্রাজিলকে নতুন করে গড়ে তুলবো।
লুলার অভিযোগ, ক্ষমতার শেষ দিকে বলসোনারো সরকারি টাকা নয়-ছয় করেছেন। তার সরকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পুরো অর্থ শেষ করে ফেলেছেন। স্কুলে খাবার, ভ্যাকসিন ও মানুষের নিরাপত্তার জন্য কোনো অর্থই বাকি নেই।
‘তারা দেশের পরিবেশকে পুরোপুরি নষ্ট করে দিয়েছে। শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ক্ষেত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
লুলা বলেন, করোনাকালে ব্রাজিলের ছয় লাখ ৮০ হাজার মানুষ মারা গেছেন। বলসোনারো সরকার সঠিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় এমনটি ঘটেছে।
তার দাবি, ব্রাজিলের পরিবেশগত যে শক্তি আছে, তা অন্য কোনো দেশের নেই। সুতরাং দেশের কৃষিখাতের উন্নয়নে অ্যামাজন পরিষ্কার করার কোনো দরকার নেই।
লুলার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ৫০টি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকলেও, ছিলেন না সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো। তিনি শুক্রবারই (৩০ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা চলে যান।
অনুষ্ঠানে ছিলেন স্পেনের রাজা, জার্মানি, আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, চিলি, প্যারাগুয়ে, উরুগুয়ে ও পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট।
এদিকে, লুলার শপথকে কেন্দ্র করে ব্রাজিলের রাজধানীতে নেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শপথ গ্রহণ কেন্দ্র করে স্থানীয় সময় রোববার (২ জানুয়ারি) সকালেই স্থানীয় রাজপথগুলোতে নেমে আসেন তার সমর্থকরা। সাম্বা নৃত্যে লুলাকে বরণ করে নেওয়া হয়।
শপথ নেওয়ার পর খোলা রোলস রয়েসে চড়ে প্রাসাদে যান লুলা। সেসময় তাকে অভিনন্দন জানান প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।