ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একশর বেশি কর্মী সেখানে ১২ দিনের বেশি সময় ধরে আটকে আছেন। রুশ সেনারা ইউক্রেনে আক্রমণের প্রথম দিনে কেন্দ্রটি দখল করে নেওয়ার পর থেকে তারা আর বের হতে পারেননি।
চেরনোবিল পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রেই ১৯৮৬ সালে বিশ্বের এ পর্যন্ত সবচেয়ে মারাত্মক পারমাণবিক বিপর্যয় ঘটেছিল।
রাশিয়ার সেনাদের হামলার সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আরো ২০০ ইউক্রেনীয় রক্ষীও কেন্দ্রটিতে আটকে আছেন।
কেন্দ্রের কর্মীরা তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। পরিবেশও শান্ত। তবে বিবিসি জানতে পেরেছে, ভেতরের পরিস্থিতি কঠিন। সেখানকার খাবার ও ওষুধপত্রের মজুত সীমিত। এছাড়া মানসিক চাপ তাদের স্পর্শকাতর স্থাপনাটিতে নিরাপদে দায়িত্ব পালন করার ক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে উদ্বেগ বাড়ছে। রাশিয়ার সেনারা এখন ৩২ কিলোমিটার নিষিদ্ধ অঞ্চলের ভেতরে এবং কেন্দ্রটির সীমানা ঘিরে রেখেছে।
রাশিয়া বলেছে, তারা ইউক্রেনের ন্যাশনাল গার্ডের সঙ্গে যৌথভাবে স্থাপনাটিকে সুরক্ষিত রাখছে। তবে ইউক্রেন ভিন্নমত জানিয়ে বলেছে, সেখানে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে রুশ সেনাদের হাতে।
কেন্দ্রটিতে আটকে থাকা শ্রমিকদের একজনের আত্মীয় (যার নাম আমরা নিরাপত্তার কারণে নাম দিচ্ছি না; বিবিসিকে বলেছেন, রুশ সেনারা কাজের পালা বদল করতে দিতে ইচ্ছুক। কিন্তু বাড়ি ফেরা বা সেখান থেকে নুতন লোক আসার সময় তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারবে না। চেরনোবিল থেকে ট্রেনে স্লাভুটিচ যাওয়া যায়। তবে ট্রেনটিকে কিছুক্ষণের জন্য রাশিয়ার প্রধান মিত্র বেলারুশের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
চেরনোবিল আর কার্যকর বিদ্যুৎকেন্দ্র নয়। তবে এটি কখনই পুরোপুরি পরিত্যক্ত হয়নি। এখনো এর সার্বক্ষণিক ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। ৩৬ বছর আগে এর চার নম্বর চুল্লি বিস্ফোরিত হওয়ার পরেও অন্যান্য চুল্লি কয়েক বছর ধরে কাজ করতে থাকে। দুর্ঘটনার পরে সরিয়ে নেওয়া সেখানকার কর্মীদের থাকার জন্যই তখন স্লাভুটিচ শহরটি গড়ে তোলা হয়েছিল।
এখনো প্রায় দুই হাজার ৪০০ লোক সাইটটিতে কাজ করেন। এর মধ্যে আছেন বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ, বাবুর্চি, চিকিৎসক ও অন্যান্য সহায়তাকর্মী আর নিরাপত্তার জন্য ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা।
স্বাভাবিক সময়ে কর্মীরা তাদের কাজের পালার শুরুতে স্লাভুটিচ থেকে ট্রেনে যাতায়াত করতেন। কিন্তু রাশিয়ার হামলার কারণে হঠাৎ করেই সবকিছু বদলে গেল।