থাইল্যান্ডে অনলাইন পোস্টে রাজতন্ত্রের অমর্যাদা করার অভিযোগে এক ব্যক্তির ২৮ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন এক আদালত। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) ওই ব্যক্তির আইনজীবী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দেশটিতে রাজতন্ত্রের নিয়মগুলো বিশ্বের কঠোর নিয়ম-নীতির মধ্যে একটি। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, জনগণের মতকে দমন করার জন্য এসব আইনের অপব্যবহার করা হয়।
দেশটির উত্তরের শহর চিয়াং রাইয়ের একটি আদালত ২৯ বছর বয়সী মংকোল তিরাকোতেকে দুটি পৃথক মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেন। মংকোল একজন অনলাইন পোশাক বিক্রেতা ও মানবাধিকারকর্মী।
এএফপিকে তার আইনজীবী বলেছেন, ওই ব্যক্তির সাজা মূলত ৪২ বছর ছিল কিন্তু আদালত তা কমিয়ে ২৮ বছর করেন। তিনি আরও বলেন, মংকোল আপিল করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন এবং আদালত তাকে ৯ হাজার ১০০ ডলার জামানতে জামিন দিয়েছেন।
থাইল্যান্ডে রাজতন্ত্রের মানহানির প্রতি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। মংকোল গত বছর থেকে অনলাইন পোস্টগুলোর জন্য তৃতীয়, পৃথক মানহানির অভিযোগের মুখোমুখি হন এবং মার্চ মাসে আদালতে হাজির হতে হবে তাকে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জ্যেষ্ঠ গবেষক সুনাই ফাসুক বলেছেন, রাজতন্ত্রের মানহানির মামলায় থাই আদালতের ২৮ বছরের সাজা প্রদান দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
২০২১ সালে থাই আদালত রাজতন্ত্রকে অপমান করার জন্য একজন নারীকে রেকর্ড ৪৩ বছরের সাজা দেওয়া হয়। আনচানের শেষ নামটি মানবাধিকার আইনজীবীরা তার আত্মীয়দের সুরক্ষার জন্য গোপন করেছিলেন। তার সাজা মূলত ৮৭ বছর ছিল এবং তিনি কারাগারে রয়েছেন।
স্পষ্টতই থাই রাজপরিবারকে মানহানি, অপমান বা হুমকি থেকে রক্ষা করার জন্য দণ্ডবিধির ১১২ ধারাটি রাজতন্ত্রের কোনো সমালোচনাকে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
থাইল্যান্ডে বেশ কয়েক বছর ধরে রাজ পরিবারের মানহানির অভিযোগ উঠছে। ২০২০ সালে গণতান্ত্রিক পরিবর্তন ও রাজতন্ত্রের সংস্কারের আহ্বান জানিয়ে তরুণদের নেতৃত্বে বিক্ষোভের জেরে মামলার সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
থাই লয়ার্স ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে গণতন্ত্রপন্থি কর্মীদের বিরুদ্ধে ২০০ টিরও বেশি মামলা হয়েছে।