কয়েকদিন আগে কুকুরছানাকে কোলে নিয়ে ট্রেড মিলে হাঁটতে দেখা গিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি ভাইরাল হয়। আর এবার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম জয়ন্তীতে মঞ্চে গান গেয়ে তাক লাগালেন মমতা।
রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলকাতার ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে গান-কবিতা-নৃত্যের মধ্যে কবিগুরুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে রবীন্দ্রনাথের প্রতিকৃতিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মমতা। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যও রাখেন তিনি। এরপর নৃত্যানুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
একে একে প্রতুল মুখোপাধ্যায়, কবি জয় গোস্বামী, শিবাজী চট্টোপাধ্যায়, অরুন্ধতী হোম চৌধুরী, স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, বাবুল সুপ্রিয়, মনোময় ভট্টাচার্য, রূপঙ্কর বাগচী, রাঘব চট্টোপাধ্যায়, শ্রীজাত, অদিতি মুন্সিসহ অন্য শিল্পীরা পারফর্ম করেন।
প্রায় দু’ঘণ্টার অনুষ্ঠানের শেষ দিকে মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করতে ওঠেন শিল্পী ইন্দ্রনীল সেন। এ সময় তিনি দর্শক আসনে বসা মমতা ব্যানার্জিকে ডেকে নেন মঞ্চে। দ্বৈত কণ্ঠে শুরু হয় গান। ইন্দ্রনীল সেনের সাথে গলা মিলিয়ে গান করেন মমতা।
মাইক হাতে নিয়ে ইন্দ্রনীল বলেন, ‘আমি প্রথম থেকেই দেখছি মমতা ব্যানার্জি প্রতিটা গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গাইছেন। তার পাশে বসে থাকা একমাত্র প্রতুল মুখোপাধ্যায়ই সেই গান শুনতে পাচ্ছেন। আমরাও তার ভাগীদার হতে চাই। আমি মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি যদি তিনি একটা গান গেয়ে শোনান।’
ওদিকে দর্শক আসনে বসে থাকা মমতা তখন মাথা নাড়িয়ে গান গাইতে অসম্মতি প্রকাশ করেন। এদিকে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ইন্দ্রনীলের আরজি ‘দিদি একটা গান গেয়ে শোনান, আপনার পছন্দের মত। না হলে তো বিপদ হয়ে যাবে।’
যদিও ইন্দ্রনীলের নাছোড়বান্দা মনোভাবের কাছে হার মানেন মমতা। মঞ্চে উঠে আসেন তিনি। হাতে মাইক্রোফোন তুলে নেন। মমতা বলেন, ‘আমি গানগুলো জানি কিন্তু ওদের মতো তো প্র্যাকটিস করিনা। তাছাড়া আমার এমনিতে কাশি হয়েছে, গলা ভাঙ্গা।’
এরপর ‘প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে…’ গানটি গাইতে শুরু করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর গান শুনে করতালিতে ফেটে পড়ে গোটা প্রেক্ষাগৃহ। মমতার গান গাওয়ার সেই কয়েক মিনিটের ভিডিও ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
তবে সরকার চালানোর পাশাপাশি মাঝেমধ্যেই নতুন নতুন ভূমিকায় দেখা যায় মমতাকে। কখনো আদিবাসীদের সঙ্গে কোমর দুলিয়ে নৃত্য, কখনো রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে পথ চলতি মানুষের সাথে খোশ গল্পে মেতে ওঠা আবার নিজের গাড়ি বহর থামিয়ে আচমকা রাস্তার চায়ের দোকান ঢুকে চা, চপ বা মোমো বানাতেও দেখা গিয়েছিল রাজ্যটির প্রশাসনিক প্রধানকে। তবে বিরোধীরা এই নিয়ে সমালোচনা করলেও মমতা আছেন মমতাতেই। যেমনটা দেখা গেল মঙ্গলবার সন্ধ্যায়।