পাকিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ‘আজাদি মার্চে’র কারণে সবার নজর আজ রাজধানী ইসলামাবাদের দিকে। দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে পিটিআই’র নেতাকর্মীরা রাজধানীর অভিমুখে যাত্রা করেছেন। যদিও কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের সমাবেশের অনুমতি দেয়নি।
এই সমাবেশ ঠেকাতে সরকার সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা উচ্চ সতর্কতায় অবস্থান করছেন। এদিকে লাহোরের বাট্টি চকে রণক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। সেখানে পিটিআই কর্মীরা ব্যারিকেড ভেঙে সমাবেশে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ছুড়ছে পুলিশ।
লাহোরে পিটিআইয়ের শীর্ষ নেতারা তাদের কর্মীদের বাট্টি চকে জড়ো হতে বলেছেন। সেখান থেকেই তারা ইসলামাবাদের উদ্দেশে রওনা হবেন।
দলীয় কর্মীরা মোড়ে মোড়ে জড়ো হয়ে ব্যারিকেড সরানোর চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুলিশ কাঁদানেগ্যাস নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করেছে।
এদিকে এক টুইট বার্তায় সাবেক জ্বালানিমন্ত্রী হামাদ আজহার জানিয়েছেন, তিনি বাট্টি চকে পৌঁছেছেন। অন্যদিকে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়াসমিন রশিদের গাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। তাকে সামনে এগোতে দেওয়া হয়নি।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাট্টি চকে পিটিআই’র ১০ জনের বেশি কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া শ্রীনগর হাইওয়ে থেকে আরও বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ডি-চক থেকেও পিটিআই কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান ওয়ালি ইন্টারচেঞ্জ থেকে সমাবেশে নেতৃত্ব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে তিনি হেলিকপ্টারে সেখানে পৌঁছেছেন। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, পাকিস্তানের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
জনগণকে আজাদি মার্চে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইমরান খান তার সমর্থকদের আশ্বস্ত করেছেন যে, পিটিআই নিজেদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেবে। তবে এর মধ্যেই খবর পাওয়া গেছে যে, আজাদি মার্চকে কেন্দ্র করে ইমরান খানকে আটকের পরিকল্পনা করছে দেশটির সরকার। ইমরান খান এবং তার সহযোগীদের আটক করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এক শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে দ্য নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইমরান খানের দল বড় ধরনের যে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে তা ঠেকাতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মূলত তার দল যেন সমাবেশ করতে না পারেন সেজন্যই ইমরান খান এবং তার দলের অন্যদের আটকের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
পিটিআই’র আজাদি মার্চ বানচাল করতে সর্বশক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার পুলিশ পিটিআই কর্মী-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে। ইতোমধ্যে লাহোর, করাচি, ইসলামাবাদ এবং রাওয়ালপিন্ডিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে এবং দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে রাজধানী শহরে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ রাখা হয়েছে।