English

25 C
Dhaka
রবিবার, নভেম্বর ১৭, ২০২৪
- Advertisement -

রকেট হামলার পরেও বেঁচে থাকার অবিশ্বাস্য কাহিনি

- Advertisements -

গত ১৪ জানুয়ারি ইউক্রেনের নিপ্রোতে রাশিয়ার রকেট হামলায় মারা যান ৪৬ জন। বেঁচে যাওয়া মানুষরা কী বলছেন?

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এটাই ছিল আবাসিক এলাকায় সবচেয়ে ভয়ংকর রকেট হামলা। যার জেরে ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। প্রচুর মানুষ আহত হয়েছেন। তবে, অল্প কিছু মানুষ অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে গেছেন।

অ্যানাস্তাসিয়া শ্বেতের বয়স ২৪ বছর। যে ৯তলা ভবনে রাশিয়ার রকেট এসে আছড়ে পড়ে, তার সাত তলায় মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন শ্বেত। ওইদিন মা ও বাবাকে হারিয়েছেন তিনি, হারিয়েছেন প্রিয় বেড়ালকে, হারিয়ে গেছে তার ঘরগেরস্থালি। শুধু নিজে বেঁচে গেছেন।

সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি প্রথমেই বলেন, আমি ওই মর্মান্তিক ঘটনার কথা বলি—নিজেকে হালকা হওয়ার জন্য। আমি জেনে গেছি, ওই বেদনা সারাজীবন আমাকে বয়ে বেড়াতে হবে।

ছোট থেকেই ওই অ্যাপার্টমেন্টে শ্বেত থাকতেন। মা ব্যাংকে কাজ করতেন। বাবা ছিলেন মেকানিক। যুদ্ধের পর তিনি কাজ হারান। শ্বেত ও তার মা পশু, বিশেষ করে বেড়ালদের খাওয়াতেন। আর সবাই মিলে সৈনিকদের সাহায্যের জন্য জিনিস বানাতেন।

১৪ জানুয়ারিতেও খাওয়া-দাওয়ার পর শ্বেতের বাবা-মা মোমবাতি বানাচ্ছিলেন সেনাদের জন্য। শ্বেত সারারাত বেকারিতে কাজ করেছেন। তাই তিনি একটু ঘুমিয়ে নিতে শোয়ার ঘরে গিয়েছিলেন। ঘুম ভাঙে প্রচণ্ড শব্দে এবং প্রথমে মনে হয়েছিল ভূমিকম্প হচ্ছে। সবকিছু ছাড়খাড় হয়ে যাচ্ছে।

প্রথমে সে ঘর থেকে মা-বাবাকে ডাকতে থাকে। তারপর ঘর থেকে উঁকি দিতেই দেখে ফ্ল্যাটের আর কিছু নেই। যে রান্নাঘরের সামনে বসে বাবা-মা কাজ করছিলেন, তা ভেঙে নিচে পড়ে গেছে।

উদ্ধারকারীরা শ্বেতকে উদ্ধার করে। তার মা-বাবার নিথর দেহও ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করে আনে। তারপর থেকে দাদির বাড়িতে আছে শ্বেত। তার সঙ্গী এখন একরাশ যন্ত্রণা।

মনোবিজ্ঞানী ওলহা বতভিনোভার বেঁচে যাওয়ার কাহিনিও চমকপ্রদ। তারা স্বামী-স্ত্রী দুই ঘরে কাজ করছিলেন। ওলহা যখন ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছিলেন, তখন তার স্বামী পাশের ঘর থেকে ডাকেন। ওলহা কাজ ফেলে অন্য ঘরে স্বামীর কাছে যান। ওই সময়ই রকেট আছড়ে পরে অ্যাপার্টমেন্টে।

আর যে ঘরে ওলহা ছিলেন, সেই ঘর নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ওলহার মাথায় আঘাত লাগে। কিন্তু তার স্বামী একজন চিকিৎসক। তিনি তাড়াতাড়ি একটি টি শার্ট দিয়ে মাথায় ব্যান্ডেজ করে দেন। ওলহা জানান, এটা তার দ্বিতীয় জন্ম।

শ্বেত ও ওলহা এখন ইতিবাচক ভাবতে চান। তারা সেনাদের জন্য, দুর্গত মানুষের জন্য অনুদান তুলছেন। তারপর তা তাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। রকেট-হামলা, প্রিয়জন হারানোর শোক সঙ্গে নিয়ে—যারা বেঁচে আছেন, তাদের জন্য কাজ করতে পথে নেমে পড়েছেন তারা।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন