ভারতীয় রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে ৬৬ কিলোমিটার দূরে হরিয়ানার রোহতকে একটি নিয়োগ শিবিরে জড়ো হওয়া শ্রমিকদের মধ্যে একজন রাজমিস্ত্রি লেখারাম। তিনি বলেন, এখানে বেকারত্ব রয়েছে এবং এর জন্যই মানুষ (বিদেশে) চলে যেতে চাচ্ছে।
লেখারাম বলেন, আমাদের ভাগ্যে যদি মৃত্যু লেখা থাকে, তাহলে আমরা এখানেও মরতে পারি, ওখানেও মরতে পারি। আমি আশা করছি, আমরা (ইসরায়েলে) যাবো, ভালো কাজ করবো এবং কিছু সময় থেকে ফিরে আসবো।
১৪০ কোটি জনসংখ্যা নিয়ে বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ ভারত। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, দেশটির শহরাঞ্চলে বেকারত্বের হার ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। কিন্তু ২৯ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে ১৭ শতাংশেরও বেশি বেকার এবং অন্যরা নৈমিত্তিক শ্রমিক হিসেবে কাজ করে।
ফলে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়েও ভারত সরকারের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে বেকারত্ব।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, গত বছর সংঘাত শুরুর আগেই কর্মী পাঠানোর বিষয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে ভারতের চুক্তি হয়েছিল। তিনি বলেন, ইসরায়েলে শ্রম আইন খুবই কঠোর এবং আমরাও বিদেশে ভারতীয়দের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আমাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন।
চলতি মাসে একটি ইসরায়েলি পত্রিকা জানিয়েছে, নির্মাণ খাতের শক্তি বাড়ানোর জন্য চীন, ভারত এবং অন্যান্য জায়গা থেকে প্রায় ৭০ হাজার বিদেশি কর্মী নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল ইসরায়েল। কিন্তু গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর এই উদ্যোগ স্থবির হয়ে পড়ে।
নিয়োগ শিবিরে অপেক্ষমান বিবেক শর্মা নামে ২৮ বছর বয়সী এক রাজমিস্ত্রি বলেন, তিনি ইসরায়েলে যুদ্ধের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন। এরপরও মোটা টাকা উপার্জন করতে পারলে সেই ঝুঁকি নিতে রাজি রয়েছেন।
ভারতীয় এ যুবকের বিশ্বাস, তিনি ইসরায়েলে কাজ করে বছরে অন্তত ১০ লাখ ভারতীয় রুপি উপার্জন করতে পারবেন।
‘এই পরিমাণ টাকা ভারতে আয় করতে গেলে আমার পাঁচ বছর লাগবে,’ বলেছেন বিবেক।
সরকারি তথ্যমতে, বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ ভারতীয় নাগরিক বিদেশে শ্রমিক, পেশাদার এবং বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছেন।