রাশিয়ায় যুদ্ধবিরোধী কোনো কথা বললে কিংবা ইউক্রেনের পক্ষে কোনো মত গেলেই চাকরি হারাতে হচ্ছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, কামরান মানাফ্লাই নামে মস্কোর একটি স্কুলে ভূগোলের শিক্ষক যুদ্ধ নিয়ে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। নিজের একান্ত মত প্রকাশ করে দেওয়া ওই পোস্টে কারণেই তাকে চাকরি হারাতে হয়েছে ।
কামরান বলেন, পোস্ট দেওয়ার কারণে দুদিন পর কর্মক্ষেত্রে অনৈতিক আচরণের কারণে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশকে ‘অনৈতিক” বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ জানিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।
এই স্কুলশিক্ষক বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাকে ফোন করে ওই পোস্ট ডিলিট করতে বলেন। অন্যথায় চাকরি ছাড়তে হবে হুমকি দেন। কিন্তু নিজস্ব মতে অটল কামরান পোস্ট ডিলিট করেননি। তিনি বলেন, আমি জানি, এখানে যুক্তির কোনো দাম নেই। তাই আমি চিন্তা করেছি, চাকরি ছেড়ে দেওয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।
মস্কোর একটি সরকারি মেডিকেল সেন্টারের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অ্যানা লেভাদনায়া একজন ইনস্টাগ্রাম তারকাও। তার ২০ লাখের বেশি ফলোয়ার রয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরু হওয়ার সময় তিনি বিদেশে ছিলেন। সেখান থেকে ইনস্টাগ্রামে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে পোস্ট দেন তিনি।
এর কয়েক দিন পর অ্যানা বিদেশে থেকেই সহকর্মীদের পাঠানো এক ভিডিওতে জানতে পারেন, এক সম্মেলনে শতাধিক সহকর্মীর সামনে মেডিকেলের পরিচালক তার যুদ্ধবিরোধী মতামতের কঠোর নিন্দা করেছেন। এর কয়েক দিন পর তাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়, অন্যথায় তাকে বরখাস্ত করা হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। পরে বাধ্য হয়ে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের চাকরি ছেড়েছেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর রাশিয়ার হাজারো নাগরিক রাস্তায় যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ করেছে। রাশিয়া সরকার এই বিক্ষোভ কঠোর হাতে দমন করেছে। হাজারো বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে। নতুন আইন প্রণয়ন করেছে, যাতে রাশিয়ান সামরিক বাহিনী সম্পর্কে ‘ভুয়া’ তথ্য ছড়ালে ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।