ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে তৈরি করা বিবিসি’র ডকুমেন্টারির প্রদর্শন বন্ধে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে সেখানে পাথর নিক্ষেপের অভিযোগও উঠেছে।
ডকুমেন্টারিটির অনলাইন লিংক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যালয়ের বাইরে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ফোনে ডকুমেন্টারি দেখছেন।
এর আগে সোমবার জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোশ্চেন’ শীর্ষক ডকুমেন্টারিটি প্রদর্শনের ঘোষণা দিয়েছিল।
সম্প্রতি বিবিসির এ ডকুমেন্টারিটি ভারত ও এর বাইরে বিপুল রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনও অনুমতি না নেওয়ায় ডকুমেন্টারিটি প্রদর্শনের বিরুদ্ধে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নেওয়ার হুমকিও দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষের দাবি, এটি দেখালে ক্যাম্পাসের শান্তি ও সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে।
মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে ২০০২ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়। গুজরাট দাঙ্গার সমকালীন ঘটনাবলীর ওপর এ ডকুমেন্টারি। যুক্তরাজ্যে গত ১৭ জানুয়ারি ডকুমেন্টারি সিরিজটির প্রথম পর্ব সম্প্রচারিত হয়। এরপর, গত সপ্তাহেই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটিকে ‘প্রোপাগান্ডা’ বা অপপ্রচার বলে অবহিত করে। সেসময় আরও বলা হয়, এতে উপনিবেশিক মানসিকতা ফুটে উঠেছে।
প্রামাণ্যচিত্রটির বিরুদ্ধে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের এই নিষেধাজ্ঞার পর, এটি নিয়ে করা ৫০টি টুইটার পোস্টও ভারত সরকারের আপত্তির মুখে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এটি নিয়ে আলোচনা রয়েছে, বা এটি শেয়ার করা হয়েছে – ইউটিউবকেও এমন সব ভিডিও সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
দেশটির আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু-ও বিবিসির ডকুমেন্টারির সমালোচনা করেছেন। তিনি একে দেশের ভেতরে ও বাইরের একটি ক্ষতিকর প্রচারণা বলে অবহিত করেন। তিনি আরও বলেন, “কেউ কেউ বিবিসিকে ভারতের সুপ্রিম কোর্টেরও ঊর্ধ্বে মনে করেন।”
বিবিসির ডকুমেন্টারি প্রচারের ওপর কেন্দ্রীয় সরকারের এই বিধিনিষেধের কড়া সমালোচনা করেছে ভারতের বিরোধী দলগুলো।