২০১৯ সালে রাশিয়ার সামুদ্রিক সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার (১৯০ মাইল) দূরে নরওয়ের উত্তরে ইনগোয়া দ্বীপের কাছে তাকে প্রথম পাওয়া যায়। দ্বীপের কাছে জেলে নৌকার পাশে হঠাৎ সাদা রংয়ের কোন একটি প্রাণীর মাথা ভেসে উঠতে দেখা যায়।
দৃশ্যটি বিস্ময়ের সৃষ্টি করে কারণ সাদা রঙের বেলুগা তিমি দক্ষিণ আর্কটিক সাগরের এই অংশে দেখা যায় না। বিস্ময় আরো বাড়ে যখন দেখা যায় তিমিটির শরীরে শক্ত করে একটি বেল্টের মত বস্তু। জেলেদের কাছে প্রথম মনে হয়েছিল তিমিটি যেন বিপদে পড়ে সাহায্য চাইছে।
একজন জেলে সাহস করে নিরাপদ পোশাক পরে বরফ-শীতল পানিতে নেমে তিমিটির শরীর থেকে বেল্টের মত জিনিসটি খুলে আনেন। ঐ বেল্টের সঙ্গে একটি ক্যামেরা লাগানো এবং সেই সাথে রয়েছে একটি ইলেকট্রনিক চিপ।
চিপের ওপর লেখা ‘সেন্ট পিটার্সবুর্গের তৈরি যন্ত্র।’
তখন জোয়ার হেস্টেন নামে এক জেলে ছবি তুলে সেটি অউডান রিকার্ডসেন নামে একজন সমুদ্র জীববিজ্ঞানীর কাছে পাঠান। ঐ বিজ্ঞানী তখন সাহায্যের জন্য নরওয়ের মৎস্য বিভাগের শরণাপন্ন হন। সঙ্গে সঙ্গে নরওয়ের গোয়েন্দা বিভাগ তদন্ত শুরু করে। তাদের পক্ষ থেকে বিবিসিকে বলা হয়েছিল, ‘তিমিটিকে খুব সম্ভবত রাশিয়া তাদের গবেষণার কাজে লাগাচ্ছিল।’
১০ মে ২০২১ সালের বিবিসি একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, রাশিয়া বহুদিন ধরেই সামরিক উদ্দেশ্যে ডলফিনের মত সাগরের স্তন্যপায়ী প্রাণী ব্যবহার করছে। বেশ আগে ব্যারেন্টস অবজারভার নামে নরওয়ের একটি ওয়েবসাইটে রাশিয়ার মারমানস্ক নামে একটি জায়গার কাছে তিনটি রুশ নৌ ঘাঁটির কাছে তিমি আটকে রাখার খাঁচার অস্তিত্বের প্রমাণ হাজির করা হয়েছিল। কেন এসব খাঁচা, এগুলোর ভেতর তিমি কেন – এ নিয়ে রুশ সামরিক বাহিনী কখনই মুখ খোলেনি।
হভালদিমির মানুষের প্রতি খুব আগ্রহী ছিল এবং মানুষের হাতের সংকেতে সাড়া দিত। যার ফলে নরওয়ের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা অনুমান করে, নরওয়েজিয়ান জলসীমা অতিক্রম করার আগে একটি গবেষণা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তাকে রাশিয়ায় বন্দি করে রাখা হয়েছিল। মস্কো হভালদিমির নিয়ে অভিযোগের কোনো প্রতিক্রিয়া কখনও জানায়নি।
সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী সেবাস্টিয়ান স্ট্র্যান্ড নরওয়েজিয়ান পাবলিক ব্রডকাস্টার এনআরকে বলেছেন, ‘তিমিটির মৃত্যুর ঘটনা ভয়ঙ্কর। গত শুক্রবারও ভালো ছিল তিমিটি। তাই আমাদের এখানে খুঁজে বের করতে হবে আসলে এখানে কী ঘটেছে।’ তবে তিনি এও জানিয়েছেন, প্রাণীটির শরীরে বড় কোনো বাহ্যিক আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি এবং কী কারণে মৃত্যু হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়।