English

19 C
Dhaka
শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
- Advertisement -

মারাত্মক খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে চীনে

- Advertisements -

ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ কমে যাওয়ায় চীনে মারাত্মক খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। দেশটিতে জনসংখ্যার অনুপাতে আবাদযোগ্য জমি অনেক কম হওয়ায় এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শনিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে যে পরিমাণ আবাদযোগ্য জমির রয়েছে, তার মাত্র ৭ শতাংশ চীনের অধীনে। আর তাদের নাগরিকদের সংখ্যা হলো বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২২ শতাংশ। তারপরও দেশটি এই নাগরিকদের খাদ্য চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে।
নগরায়ন ও শিল্পায়নের জন্য চীন ১৯৪৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত আবাদযোগ্য জমিটির এক পঞ্চমাংশ হারিয়েছে। বর্তমানে ভালোভাবে চাষ করা যায় এমন জমির পরিমাণ মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ রয়েছে।
চীনের খাদ্য সরবরাহের সঙ্গে চাহিদার ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। বিশ্বের বড় আমদানিকারক দেশ হিসেবে চীনের বড় সমস্যা হলো করোনা মহামারির কারণে অধিকাংশ দেশ খাদ্য পণ্য রফতানি কমিয়ে দিয়েছে। ইতোমধ্যে ভারত ও ভিয়েতনাম চাল রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চলতি বছরের জুলাইয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য পণ্য মজুত করতে চেয়েছিল। তবে ব্রাজিল, রাশিয়া, কানাডা, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া রফতানি কমিয়ে দেওয়া দেশটি ব্যাপক সমস্যায় পড়ে। তাদের হিসেব মতে, ২০৩০ সাল নাগাদ তাদের আরও অতিরিক্ত ১০০ টন খাদ্য শস্য আমদানি করতে হবে।
করোনা মহামারি মধ্যে দেশটিতে সব ধরনের খাদ্য পণ্যের দাম কমপক্ষে ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। আর শূকরের মাংসের দাম ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
এদিকে, সম্প্রতি চীনের দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে ব্যাপক বন্যা হয়। এতে বিপুল কৃষি খামার ভেসে গিয়ে নষ্ট হয়েছে হাজার হাজার টন খাদ্যশস্য। এতে দেশটি ২০.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতির মুখে পড়ে।
সম্প্রতি এক জরিপে উঠে এসেছে, দেশটির জনগণ প্রচুর খাদ্য নষ্ট করে। একজন নাগরিক তার প্রতি বেলার মিলে কমপক্ষে ৯৩ গ্রাম খাবার নষ্ট করে। আর বছরে তারা যে পরিমাণ খাদ্য নষ্ট করে তা দিয়ে ৩০ থেকে ৫০ মিলিয়ন লোকের এক বছর খাওয়ানো সম্ভব বলে জানানো হয়েছে। ২০১৫ সালেই দেশটির এক কোটি ১০ থেকে ৮০ লাখ টন খাবার নষ্ট করা হয়েছে।
চীনের খাদ্য সংকটের বিষয়টি প্রথম নজরে আসে ১১ আগস্ট চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর একটি বক্তব্যে। তিনি বলেন, যে পরিমাণ খাবার নষ্ট হচ্ছে তা ভীতিকর এবং পীড়াদায়ক। করোনা মহামারি খাবার অপচয়ের বিষয়ে আমাদের সতর্কবার্তা শুনিয়েছে। এরপরই চীনে শুরু হয়েছে ‘ক্লিন প্লেট ক্যাম্পেইন।’
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বার্তার পর উহানের ক্যাটারিং ইন্ড্রাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন শহরের রেস্টুরেন্টগুলোকে খাবার সরবরাহ সীমিত করার আহ্বান জানিয়েছে। বলা হয়েছে কোনো গ্রুপে যত মানুষ খাবারের আদেশ দেবে তার চেয়ে অন্তত এক পদের খাবার কম সরবরাহ করতে হবে।
তবে, ইতোমধ্যেই অনলাইনে ‘এন-১’ সিস্টেমের সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই এই সিস্টেমকে ‘খুবই কঠোর’ বলে মনে করছেন। মাইক্রোব্লগিং সাইট উইবোতে এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘কোনও মানুষ একা রেস্টুরেন্টে গেলে কী হবে? কত খাবারের আদেশ দিতে পারবে? শুন্য?’ অন্যরা বলছেন সাধারণত বেশিরভাগ রেস্টুরেন্টই বেশি খাবার নষ্ট করে না। এর পরিবর্তে অসংযত ভোজনে কর্মকর্তারাই বেশি অপচয় করেন।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারির কারণে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক দেশ হিসেবে চীন খাদ্য পণ্য সরবরাহে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। পাশাপাশি তারা খাদ্য পণ্য নষ্টের বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে। এতে আগামী দিনে হয়ত দেশটির খাদ্য সংকট মোকাবেলায় সক্ষম হবে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন