জঙ্গলে ঢুকে মহুয়া থেকে তৈরি দেশি মদ খেয়ে নিশ্চিন্তে ঘুম দিল হাতির পাল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেখানেই পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিল দলটি। আর তাদেরকে গভীর জঙ্গলে ফেরত পাঠাতে একেবারে নাকাল হতে হয় বন দপ্তরকে। অনেক চেষ্টার পর শেষে ড্রাম, ঢাক, মাদল পিটিয়ে তাদের ঘুম ভাঙিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, ওড়িশার কেওনঝরের শিলিপদা গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জঙ্গলের ভেতরে মহুয়া পাত্রে ভরে পানিতে ভিজিয়ে রেখে এসেছিলেন। বুধবার ভোরে এক বাসিন্দা সেই মদ আনতে গিয়েছিলেন। বেশ খানিকক্ষণ এদিক-ওদিক ঘোরাঘুরির পর তিনি দেখতে পান, সব পাত্র ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আর মদও নেই।
কিন্তু এত মদ কে খেয়ে ফেলল সেটা ভাবতে ভাবতেই জঙ্গলের ভেতর হাঁটাহাঁটি শুরু করেন তিনি। কিছুদূর যেতেই দেখেন, ২৪টি হাতি সেখানে একেবারে বেহুঁশ হয়ে ঘুমাচ্ছে। বুঝতে পারেন, সেই মহুয়া খেয়েই এমন অবস্থা ওই হাতির দলের। এরপর সঙ্গে সঙ্গে গ্রামে ফিরে যান তিনি এবং আরো কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আবারও জঙ্গলে যান। তারপর শুরু হয় সেই হাতিদের ঘুম ভাঙানোর পালা।
কিন্তু তখন তো হাতিদের একেবারে বেসামাল অবস্থা। কারো ডাকাডাকি, চিৎকারই হাতিগুলোর কানে যাচ্ছে না। শেষ অবধি ঘণ্টাখানেক পর খবর দেওয়া হয় বন দপ্তরে। তারাও প্রথমে এসে হাতিগুলোরর ঘুম ভাঙাতে ব্যর্থ হয়। শেষে ড্রাম, মাদল, ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘুম ভাঙানো হয়। তারপর হেলতে দুলতে গভীর জঙ্গলে ফিরে যায় হাতিগুলো।
ভোরবেলা থেকে হাতিদের ঘুম ভাঙানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল। অবশেষে বেলা ১০টা নাগাদ তাদের ঘুম ভাঙে। তবে হাতিদের মহুয়া খাওয়ার বিষয়টি মানতে চাইছে না বন দপ্তর। তাদের ধারণা, হাতিগুলো ক্লান্ত হয়ে সেখানে অঘোরে ঘুমাচ্ছিল।
হাতির ওই পালে ৯টি দাঁতাল পুরুষ হাতি ছিল বলে জানা গেছে। এ ছাড়া ওই দলে ছয়টি স্ত্রী হাতি এবং ৯টি বাচ্চা হাতি ছিল। সকলেই পেট ভরে মহুয়া খেয়ে ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল একটি মদপ্রেমী বাঁদরের ভিডিও। সেই বাঁদর বিয়ারের ক্যান খুলে আমেজ করে তা খাচ্ছিল। ভিডিওটিতে তার মদপানের ভিডিও দেখে পরিষ্কার বোঝা গিয়েছিল, এটাই তার প্রথম বিয়ার খাওয়া নয়! মদ্যপানে সে ভালোই অভ্যস্ত। সেখানকার বাসিন্দারাও এ কথা স্বীকার করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, বাঁদরটি মদের দোকানে রীতিমতো ভাঙচুর করে। দোকানে মদ কিনতে আসা ব্যক্তিদের হাত থেকে মদ ছিনিয়ে নিত সে। তারপর গাছের ওপরে চড়ে পা দুলিয়ে বসে মদ খেত। এ জন্য ওই দোকানের ক্রেতারা মদ কিনতে বেশ ভয়ে থাকেন।