মহাকাশে দীর্ঘ আট মাস আটকে থাকার পর অবশেষে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস এবং তার সহকর্মী বুচ উইলমোর পৃথিবীতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নাসা ও স্পেসক্রাফটের উদ্যোগে তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য মহাকাশযান ইতোমধ্যেই রওনা দিয়েছে।
শনিবার রাতে ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল স্পেস ফোর্স স্টেশন থেকে ‘ক্রিউ-৯’ অভিযান শুরু হয়, যার মাধ্যমে দুজন মহাকাশচারীকে মহাকাশে পাঠানো হচ্ছে। তাদের মিশন হলো ‘ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন’ (আইএসএস)-এ পৌঁছে গবেষণা করা এবং সুনীতা ও বুচকে নিরাপদে পৃথিবীতে ফেরানো।
গবেষণা সম্পন্ন করে, সুনীতা ও তার সহকর্মীরা ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে পৃথিবীতে ফিরে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে তাদের ফেরার এই প্রক্রিয়া বেশ দীর্ঘ হয়ে গেছে। কারণ তাদের মহাকাশযান বিকল হওয়ায় তারা গত জুন মাস থেকে আইএসএসে আটকে রয়েছেন। এবার সেই মিশন সফলভাবে সম্পন্ন করতে শুরু হলো উদ্ধার অভিযান।
এর আগে, ঘূর্ণিঝড় হেলেনের কারণে ফ্লোরিডায় খারাপ আবহাওয়ার জন্য সুনীতাদের ফেরানোর প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়েছিল। তবে এখন সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর আইএসএসে পৌঁছাবে ‘ফ্যালকন ৯’ রকেট এবং ড্রাগন মহাকাশযান। স্পেসক্রাফটের এই অভিযান পরিচালনা করছেন নিক হগ এবং আলেকসান্দ্র গোরবুনভ, যারা আইএসএসে পৌঁছে প্রায় ২০০টি গবেষণা পরিচালনা করবেন।
এই অভিযানটি নাসার বাণিজ্যিক প্রকল্পের অধীনে ইলন মাস্কের স্পেসএক্স সংস্থার নবম মিশন। ‘ক্রিউ-৯’ এর বিশেষ মহাকাশযানটি আইএসএসে চারজন মহাকাশচারীকে বহন করবে, তবে সুনীতা ও বুচের জন্য দুটি আসন খালি রাখা হয়েছে।
সুনীতা এবং বুচ ‘স্টারলাইনার’ মহাকাশযানে চড়ে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন। কিন্তু কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে, বিশেষ করে হিলিয়াম গ্যাস লিকের ফলে, তারা সেই যানে করে পৃথিবীতে ফিরে আসতে পারেননি। সেই ঝুঁকি এড়াতে তাদের ফেরানোর জন্য নতুন এই মিশন পরিচালিত হচ্ছে।
এখন আইএসএসে থাকা ‘ক্রিউ-৮’ ড্রাগন ক্যাপসুলে সুনীতা এবং বুচ উঠে যাবেন এবং ‘ক্রিউ-৯’ তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, এই দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে তারা নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরবেন।