ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যে আবারও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। রাজ্যটিতে পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। এই সহিংস পরিস্থিতির মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছে বিরোধী দল কংগ্রেস।
কংগ্রেসের অন্যতম প্রভাবশালী নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী মণিপুর সফরে না যাওয়ার কারণে মোদির সমালোচনা করে বলেন, ‘মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদাসীনতা ক্ষমার অযোগ্য।’ তিনি দাবি করেন, সংঘর্ষপীড়িত রাজ্যটির মানুষ অসহায়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, কিন্তু মোদি সেই দুর্দশার দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন না।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, মণিপুরে সহিংসতা থামাতে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। তিনি বলেন, মণিপুরের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী মোদির ইচ্ছার উপর নির্ভর করতে পারে না। প্রায় দেড় বছর ধরে রাজ্যটি জ্বলছে, আর মোদি কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেননি।’
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে আরও সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, গত ১৬ মাসে প্রধানমন্ত্রী এক সেকেন্ডও মণিপুরে কাটাননি, যেখানে রাজ্যটির মানুষ তার এবং শাহের দুষ্কর্মের খেসারত দিচ্ছে। তিনি মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংকে অপসারণের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘বীরেন সিং তার পদে অযোগ্য।’
মল্লিকার্জুন খাড়গে আরও বলেন, মণিপুরে অব্যাহত সহিংসতা মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে দায়িত্ব নিতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সহায়তায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে।
এদিকে, মণিপুরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সহিংস আকার ধারণ করেছে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সোমবার সকালে রাজ্যের প্রধান সরকারি ভবনগুলোতে হামলা চালায়। তারা রাজভবন এবং থৈবালের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ে হামলা করে এবং ডিসি অফিসে উড়ানো পতাকা নামিয়ে সাতরঙা একটি পতাকা উড়ায়।
এর আগে, মণিপুরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ইম্ফলের রাস্তায় নেমে আসে। তারা রাজ্য প্রশাসনকে ব্যর্থ বলে অভিযুক্ত করে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার দ্রুত সংস্কারের দাবি জানায়।
মণিপুরের চলমান সহিংসতা কেন্দ্রীয় সরকারের সামনে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।