ভারতের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ‘কুম্ভমেলা’ নিয়ে উঠে এল বড়সড় অনিয়মের তত্ত্ব। সূত্রের খবর, কুম্ভমেলায় সাধু-সন্তদের করোনা পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা একটি বেসরকারি ল্যাব টার্গেট পূরণ করতে একের পর এক মারাত্মক দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে। উত্তরাখন্ড সরকারের নিযুক্ত করা ওই বেসরকারি সংস্থা এক লাখ ভুয়া কোভিড টেস্ট রিপোর্ট দেয় বলেও জানা গেছে তদন্তে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা হরিদ্বার কুম্ভমেলাকে আখ্যা দিয়েছে সুপার স্প্রেডার ইভেন্ট হিসেবে। ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের পিছনে বিশেষজ্ঞরাও অনেকে এই লাখ লাখ মানুষের জমায়েতকে দায়ী করছেন। কুম্ভমেলা নিয়ে কোভিড বিধি না মানা ও ভুয়া টেস্ট সংক্রান্ত একাধিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় তদন্ত শুরু করেছিল হরিদ্বার জেলা প্রশাসন। তদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, করোনা পরীক্ষার টার্গেট পূরণ করতে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে টেস্টিং এর দায়িত্বে থাকা সংস্থা। ওই বেসরকারি ল্যাবটি কুম্ভমেলায় অন্তত ১ লাখ ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট দিয়েছে। এই করোনা রিপোর্টগুলি দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের নামে। যারা হয়তো কুম্ভমেলাতে অংশগ্রহণও করেনি। শুধু তাই নয়, ওই বেসরকারি সংস্থা নাকি একটি মাত্র কিট থেকে ৭০০ জনের করোনা পরীক্ষা করেছে বলে দেখানো হয়েছে। আবার নমুনা সংগ্রহের জন্য যে ২০০ জনের নাম দেওয়া হয়েছিল, তাদের অধিকাংশই স্বাস্থ্যকর্মী নন। তারা হয় ডেটা এন্ট্রি অপারেটর, না হয় শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে অনেকে আবার রাজস্থানের বাসিন্দা। ওই সংস্থাটি নাকি একই মোবাইল নম্বর দিয়ে ৫০ জন পর্যন্ত মানুষের নাম রেজিস্টার করেছিল।
হরিদ্বার কুম্ভমেলা নিয়ে এমনিতেই দেশজুড়ে বিতর্ক। বিরোধীরা তো বটেই বিদেশি বহু সংস্থাও এই বড়সড় ধর্মীয় জমায়েতকেই ভারতে কোভিড ছড়ানোর এবং নতুন কোভিড স্ট্রেন উৎপন্ন হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে তুলে ধরেছে। এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য এই বিপুল জনসমাবেশকে দায়ী করেছেন। আর সেখানেই কোভিড প্রটোকল সংক্রান্ত মারাত্মক সব অনিয়মের অভিযোগ উঠছে। স্বাভাবিকভাবেই, প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে উত্তরাখণ্ড সরকারের ভূমিকা নিয়ে।