নাম তার সানিয়া মির্জা। দেশটির উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মির্জাপুর এলাকার বাসিন্দা তিনি। তিনিই হতে চলেছেন দেশটির প্রথম মুসলিম মহিলা যুদ্ধবিমান চালক। এরই মধ্যে ভারতের প্রথম মুসলিম নারী হিসেবে যুদ্ধবিমান চালকের ছাড়পত্র পেয়ে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছেন সানিয়া।
বিমানচালক সানিয়ার জন্য আকাশই সব কিছু। টিভি মেকানিক শহিদ আলির মেয়ে সানিয়া ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমির (এনডিএ) পরীক্ষায় সামগ্রিকভাবে ১৪৯তম স্থান পেয়েছেন।
এনডিএ’র চলতি বছরের পরীক্ষায় পুরুষ ও নারী মিলিয়ে মোট ৪০০টি আসন ছিল। যেখানে নারীদের জন্য ১৯টি আসন ছিল এবং ফাইটার পাইলটদের জন্য ছিল মাত্র দু’টি আসন। সানিয়া নিজের যোগ্যতায় এর একটিতে জায়গা করে নিয়েছেন। এই সাফল্যে খুশি তার বাবা-মা এবং স্কুলের সহপাঠীরা।
মির্জাপুরের দেহাত কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত যশোভার নামের একটি ছোট্ট গ্রামের বাসিন্দা সানিয়া। স্থানীয় পণ্ডিত চিন্তামণি দুবে ইন্টার কলেজ থেকে তিনি মাধ্যমিক পাস করেন।
এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি মির্জাপুর শহরের গুরু নানক গার্লস ইন্টার কলেজে ভর্তি হন বলে হিন্দি দৈনিক ‘অমর উজালা’র একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় জেলার মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন সানিয়া।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সানিয়া এনডিএ পরীক্ষায় অংশ নেন এবং ১৪৯তম র্যাংক অর্জন করেন।
সংবাদমাধ্যমকে সানিয়ে বলেন, “নারী যুদ্ধবিমান চালকদের জন্য মাত্র দু’টি আসন সংরক্ষিত ছিল। প্রথমবারের চেষ্টায় আমি আসন দখল করতে ব্যর্থ হই। তবে, দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় আমি সেই যোগ্যতা অর্জন করেছি।”
সানিয়া আরও বলেন, “ইংরাজিতে ভাল কথা বললেই যে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে বেশি কদর পাওয়া যায়, এই ধারণা ভ্রান্ত।”
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী ২৭ ডিসেম্বর মহারাষ্ট্রের পুণে জেলার এনডিএ অ্যাকাডেমিতে যোগ দেবেন সানিয়া।
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে সানিয়াই হবেন ভারতীয় বিমান বাহিনীতে (আইএএফ)-এর প্রথম মুসলমান যুদ্ধবিমান চালক।
সানিয়া জানিয়েছেন, যুদ্ধবিমানের চালক হওয়ার জন্য তার অনুপ্রেরণা ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট অবনী চতুর্বেদী। তাকে দেখেই তার যুদ্ধবিমান চালক হওয়ার স্বপ্ন জাগে।
তিনি আরও বলেন, “ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট অবনী চতুর্বেদী আমাকে খুব অনুপ্রাণিত করেছেন এবং তাকে দেখে আমি এনডিএতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আশা করি আমি একদিন তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে পারব।”
দুই সঙ্গী মোহনা সিং এবং ভাবনা কান্থের পাশাপাশি অবনী চতুর্বেদীকে ভারতের প্রথম নারী যুদ্ধবিমান চালক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।