জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) এক প্রতিবেদন বলছে, গাজায় অন্তত ৫ লাখ ৭০ হাজার মানুষ ক্ষুধা নিয়ে দিন পার করছে। এ পরিস্থিতি দ্রুত দুর্ভিক্ষের দিকে যেতে পারে।
ডব্লিউএফপি’র ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন অনুসারে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর নির্বিচার বিমান হামলার মধ্যে গাজায় মানবিক যে সহায়তা প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে তা চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল। সেখানে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা বাড়ছে। পরিস্থিতি যেকোনো সময় আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গাজার বাসিন্দারা খাবার সংকটে ভুগছে। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৭০ হাজার মানুষের অবস্থায় ভয়াবহ বিপর্যয়কর। তারা ক্ষুধার্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
আইপিসি বলছে, গাজায় তীব্র সংঘাতের বর্তমান পরিস্থিতি এবং সীমিত মানবিক প্রবেশাধিকার চলতে থাকলে ৬ মাসের মধ্যে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা রয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাজাবাসী তাদের সমস্ত সম্পদ ব্যবহার করেছে। জীবিকা শেষ হয়ে গেছে। দোকানগুলো খালি পড়ে আছে। লোকজন খাবার খুঁজে পাচ্ছে না। সেখানকার বাসিন্দারা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কর্মীদের জানিয়েছে, তারা প্রায়শই পুরো দিন না খেয়ে থাকে। অনেক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ক্ষুধার্ত থাকে যাতে শিশুরা খেতে পারে। পর্যাপ্ত খাবার, বিশুদ্ধ পানি, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন সেবা দিতে না পারলে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি রয়েছে।
মহামারির আশঙ্কা করে ডব্লিউএফপির প্রধান অর্থনীতিবিদ আরিফ হোসাইন বলেন, গাজার বাসিন্দারা মহামারির খুব কাছাকাছি। পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার না পাওয়ায় তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ছে। শিশু, মহিলা ও পুরুষদের মানবিক সংকটের যে মাত্রা তা নজিরবিহীন।
আসন্ন এ বিপর্যয়ের বিষয়ে সতর্ক করে ডব্লিউএফপির নির্বাহী পরিচালক সিন্ডি ম্যাককেইন বলেন, গাজার কেউই অনাহার থেকে নিরাপদ নয়। আমরা পাশে দাঁড়িয়ে মানুষকে ক্ষুধার্ত অবস্থায় দেখতে পারি না। বেসামরিক নাগরিকদের জীবন রক্ষায় এখন মানবিক সহায়তা পাঠানোর সুযোগ প্রয়োজন। যেকোনো কিছুর চেয়ে এখন যেটা দরকার তা হলো শান্তি। মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, জীবন বাঁচাতে বিশ্বকে এখনই একত্রিত হতে হবে।