ইলন মাস্ক ও তার ট্রান্সজেন্ডার কন্যা ভিভিয়ান জেনা উইলসনের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই ভালো নয়। মার্কিন ধনকুবেরের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছিন্ন এই ট্রান্সজেন্ডার কন্যা আবারও তার ধনী বাবাকে তীব্র সমালোচনায় বিদ্ধ ও বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন।
২০ বছর বয়সি উইলসন বলেছেন, তিনি তার বাবাকে তেমন গুরুত্বই দেন না এবং টেসলা প্রধানকে ‘করুণ শিশুসুলভ মানসিকতার ব্যক্তি’ বলে উল্লেখ করেছেন।
ভিভিয়ান জেনা উইলসন ১৮ বছর বয়সে আইনিভাবে তার নাম ও লিঙ্গ পরিবর্তন করেন। সম্প্রতি মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে আবারও তার বাবা সম্পর্কে কঠোর মন্তব্য করেছেন।
করুণ শিশু-মানসিকতার লোক,
টিন ভোগ-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উইলসন মাস্ককে ‘pathetic man-child’ বা করুণ শিশু-মানসিকতার লোক’ বলে কটাক্ষ করেছেন। সেই সঙ্গে, ‘তিনি মাস্কের ক্ষমতা বা সম্পদের পরোয়া করেন না’ বলেও কটাক্ষ করেন।
উইলসনের ভাষায়, ‘তিনি একজন করুণ শিশু-মানসিকতার লোক। আমি কেন তাকে ভয় পাব? ওহহ, তার তো অনেক ক্ষমতা! না, না, না, আমি তার একটুও পরোয়া করি না। আমি কেন এই ব্যক্তিকে ভয় পাব? আমি কেন তার ভয়ে কাঁপবো? কারণ তিনি ধনী? আরে হ্যাঁ, আমি তো বুট পরেই কাঁপছি!’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কারো সম্পদের পরিমাণ নিয়ে মাথা ঘামাই না। সত্যি বলছি, একদমই না। তিনি টুইটার কিনেছেন? ঠিক আছে, তাকে অভিনন্দন!’
সদ্য তারুণ্যে পা দেওয়া এই মাস্ককন্যা আরও বলেন, বেশিরভাগ মানুষ ভয়ে আবিষ্ট হয়ে থাকে, কিন্তু তিনি কাউকে তার মনে এতটা স্থান দিতে চান না।
নাৎসি অভিবাদন বিতর্ক
উইলসন ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে মাস্কের নাৎসি স্যালুট দেওয়ার অভিযোগকেও পুনরায় সামনে এনেছেন।
এটি ছিল তার দ্বিতীয় গণমাধ্যম সাক্ষাৎকার, যেখানে তিনি দাবি করেন, ইলন মাস্ক ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে একটি নাৎসি অভিবাদন দিয়েছিলেন।
ভিভিয়ানের ভাষায়, ‘তার নাৎসি অভিবাদনের ব্যাপারটি একদমই অবিশ্বাস্য ছিল। আমরা সত্যকে সত্যই বলব এবং নাৎসি অভিবাদনকে সেরকমই বলবো। সেটি অবশ্যই একটি নাৎসি অভিবাদন ছিল। জনতাও দোষী, কারণ সে বিষয়ে কেউ কথা বলছে না। এমন জনতারও নিন্দা করা উচিত’।
মাস্কের প্রতিক্রিয়া, ‘আমি আমার ছেলেকে হারিয়েছি’
এদিকে, ইলন মাস্ক ও ভিভিয়ানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কোনো কথা হয়নি। মাস্ক এই বিচ্ছেদকে ‘ওয়োক মাইন্ড ভাইরাস’ (সচেতনতা আন্দোলনের প্রভাব) বলে দোষারোপ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রতারিত হয়েছি। আমি আমার ছেলেকে হারিয়েছি। তারা এটাকে ‘ডেডনেমিং’ (পুরনো নাম ব্যবহার) বলে। কারণ এতে বোঝায় যে, তোমার ছেলে মৃত’।
মাস্ক এ সময় মূলত এই ইঙ্গিত করেন যে, তার সন্তানের লিঙ্গ পরিবর্তনের ফলেই তিনি তাকে হারিয়েছেন।
মাস্ক আরও জানান, তিনি এই ‘ওয়োক মাইন্ড ভাইরাস’ ধ্বংস করার শপথ নিয়েছেন এবং এই লক্ষ্যে তিনি কিছুটা অগ্রগতিও হয়েছে।
ভিভিয়ানের জবাব
ভিভিয়ান জানান, তিনি ইলন মাস্ককে সম্পূর্ণভাবে ত্যাগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি আর তার সঙ্গে থাকি না এবং কোনোভাবেই তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাই না’।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২২ জুন ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালতে তার নাম ও লিঙ্গ পরিবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
এই ঘটনা আরও একবার মাস্ক ও তার পরিবারের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বকে সামনে এনেছে, যা আগেও সংবাদের শিরোনাম হয়েছে।