ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে হাজার হাজার রকেট ছুড়ে। হামাসের দাবি, মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে ইসরায়েলে পাঁচ হাজার রকেট ছুড়েছে তারা। সেইসঙ্গে হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের সীমান্ত ভেদ করে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহত হয়েছে এক হাজার ৪০০ জন। আহত তিন হাজারের বেশি। হামাসের হামলার জবাবে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল বাহিনী। এখন অবধি গাজায় একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা সাত হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে ১০ হাজারের বেশি। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, সহসাই এ হামলা থামছে না। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হুঁশিয়ার বার্তা দিয়েছেন, হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত গাজায় অভিযান চলবে।
বিবিসি’র কূটনীতি বিষয়ক সংবাদদাতা পল অ্যাডামস এখন ইসরায়েলের জেরুজালেমে সংবাদ সংগ্রহ করছেন। বিবিসি’র এক সংবাদ বিশ্লেষণে তিনি বলেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গত শুক্রবার রাতে যেভাবে গাজায় অভিযান জোরদার করেছে, তাতে মনে হচ্ছে-পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাচ্ছে।
কিন্তু এই অভিযানের মাধ্যমে গাজায় পুরোদস্তুর স্থল অভিযান শুরু হলো কি না, সেটা নিশ্চিত করে বলা মুশকিল। তবে এর মাধ্যমে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।
তিনি বলেন, আমি বুঝতে পারছি যে, পশ্চিমা কূটনীতিকরা ইসরায়েলকে এখনই সর্বাত্মক হামলার দিকে দ্রুত অগ্রসর না হয়ে বরং ধীরসুস্থে পা বাড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছেন, যাতে লেবাননের হেজবুল্লাহ, ইরাক ও সিরিয়ার শিয়া মিলিশিয়া এবং ইয়েমেনের হুতি বাহিনী এই যুদ্ধে আরও ব্যাপকভাবে জড়িয়ে পড়ার সুযোগ না পায়। তারপরও যুদ্ধটি এই অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে। মধ্যপ্রাচ্য জুড়েই এখন যুদ্ধের লাল সংকেত দেখা যাচ্ছে।’
ইসরায়েলের সৈন্যদের সঙ্গে হেজবুল্লাহ’র প্রায় প্রতিদিনই সংঘর্ষ হচ্ছে। এদিকে, ইসরায়েল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র- উভয়ই কয়েকদিন আগে সিরিয়ায় বেশকিছু লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। এছাড়া ইয়েমেন থেকেও শুক্রবার ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে, যা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে লোহিত সাগরের তীরবর্তী মিশরের দু’টি শহরে আঘাত হেনেছে। এমন পরিস্থিতে ইসরায়েল তার মিত্রদের পরামর্শ কানে নেবে কি-না, তা স্পষ্ট নয়।