স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রথমে হামলায় নিহত তিন ব্যক্তিকে একটি গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পথিমধ্যে লিলং চিংঝাও এলাকায় গাড়ি আটকায় বিপক্ষের দুষ্কৃতীরা। লাশ বহনকারী গাড়ির চালককে গুলি করে খুন করার পাশাপাশি গাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।
ঘটনার পর উপত্যকার পাশাপাশি লাগোয়া পাহাড়ি অঞ্চলেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা এন বীরেন সিংহ যুযুধান উভয় পক্ষের কাছে সংযত হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকও ডেকেছেন তিনি।
২০২২ সালের ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অব মণিপুর’ এর (এটিএসইউএম) কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই রাজ্যে। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল।
এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলো মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই মণিপুরের আদি-বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘাতের সূচনা হয়েছিল।
সংঘাত ঠেকাতে গত বছরের ৬ মে মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। নামানো হয় সেনা ও আসাম রাইফেলস বাহিনীকে। সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকির ভার দেওয়া হয় সিআরপিএফের সাবেক প্রধান কুলদীপ সিংহকে।
কুলদীপ সিংহের অধীনে এডিজিপি (ইন্টেলিজেন্স) আশুতোষ সিংহকে সমগ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার অপারেশনাল কমান্ডারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বছর ঘুরে গেলেও মণিপুরে সংঘাত থামেনি। জাতিগত এ সহিংসতায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি ঘরছাড়া হয়েছে ৬০ হাজারেরও বেশি।