চীন-রাশিয়াকে যৌথভাবে এশিয়া প্যাসিফিক বা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিজেদের ভূমিকা আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়েছে চীনের ভাইস পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান উইডং। সেই সঙ্গে এই অঞ্চলে নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে উভয় দেশের সমন্বয় বাড়ানোর উপরেও জোর দিয়েছেন তিনি।
মস্কো সফর শেষে বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দেওয়া এক বিবৃতিতে এমন আহ্বান জানান তিনি। বিবৃতিতে তিনি চীন-রাশিয়ার মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে বলেও দাবি করেন।
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মস্কো সফরকালে চীনা কর্মকর্তা রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে ইউক্রেন সংকট, কোরীয় উপদ্বীপের পরিস্থিতিসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয় সম্পর্কে মতবিনিময় করেছেন। তাছাড়া চীনের ইউরেশীয় (ইউরোপ ও এশিয়া) বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইউক্রেন সংকটের রাজনৈতিক নিষ্পত্তির জন্য মার্চের শুরুতে রাশিয়া, পোল্যান্ড, ইউক্রেন, জার্মানি ও ফ্রান্স সফর করবেন।
বরাবরই মস্কোর বিশ্বস্ত বন্ধুর ভূমিকা পালন করে আসছে বেইজিং। চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে তার প্রমাণ দিয়েছে চীন। পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কের আরও অবনতি হবে জেনেও, ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘সামরিক অভিযানের’ সরাসরি নিন্দা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে চীন।
বুধবারের বিবৃতিতে সান উইডং আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রেসিডেন্ট পুতিনের কৌশলগত দিকনির্দেশনায় দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক ইতিহাসের সেরা সময়ে রয়েছে।
এদিকে, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, এই ধরনের বিবৃতি পশ্চিমা বিশ্বের সন্দেহ ও উদ্বেগ খুব একটা বাড়াবে না। কারণ, গত দুই বছরে মস্কো ও বেইজিংয়ের এমন ঘণিষ্ঠ সম্পর্ককে যথেষ্ট উদ্বেগের সঙ্গেই দেখে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো।
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার উপর একের পর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের দেশগুলো। কিন্তু সেসব নিষেধাজ্ঞা এড়াতে মস্কোকে সাহায্য করছে বেইজিং। ফলে চীনা কোম্পানিগুলোকেও কালো তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও, রাশিয়ার পাশ থেকে সরে যায়নি চীন।
আল জাজিরা বলছে, সংকটময় এই সময়ে বেইজিংকে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক লাইফলাইন হিসেবে বিবেচনা করছে মস্কো। অন্যদিকে চীন রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় জ্বালানিসহ বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ আনতে পারছে।