ইরানে ড্রেস কোড লঙ্ঘনের দায়ে গ্রেপ্তার হওয়া এক নারী পুলিশ হেফাজতে মারা গেছেন। প্রতিবাদে গত তিনদিন ধরে চলছে বিক্ষোভ। সোমবার তৃতীয় দিনের বিক্ষোভেও যোগ দিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তারা মাশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। সোমবার ইরানের কুর্দি-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিক্ষোভকারীদের উপর পুলিশ গুলি চালায়। তাতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
তেহরান ও কুর্দি-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ইন্টারনেট অনেকটা সময় ধরে বন্ধ রাখা হয়েছিল। তেহরানে বিক্ষোভকারীদের মোকাবিলায় দাঙ্গা পুলিশ নামানো হয়েছিল।
লন্ডন-ভিত্তিক ওয়াচডগ গোষ্ঠী নেটব্লকস জানিয়েছে, পশ্চিম ইরানে কুর্দিদের এলাকায় ইন্টারনেট পরিসেবা বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ রাখা হয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠী হেনগও সোমবার দাবি করেছে, কুর্দিদের একটা এলাকায় দুইজন বিক্ষোভকারী মারা গেছেন। ইরানের কর্মকর্তারা অবশ্য এই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, কিছু বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু কেউ মারা যাননি।
গত মঙ্গলবার মাশা আমিনিকে ইরানের নীতি পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ইরানের ড্রেস কোড বা পোশাকবিধি অনুসারে মেয়েদের মাথা ঢাকা বা হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। মাশা তা পরেননি। তাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ হেফাজতে মাশার শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। পুলিশের দাবি, মাশার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়নি। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। কিন্তু তার পরিবার জানিয়েছে, মাশা অসুস্থ ছিলেন না। তার স্বাস্থ্য ঠিক ছিল। গ্রেপ্তার হওয়ার সময়ও তার শরীর একদম ঠিক ছিল।
পুলিশ ক্লোজ সার্কিট টিভির ফুটেজ প্রকাশ করে দাবি করেছে, মাশা থানায় ছিলেন, সেখানেই তার শরীর খারাপ হয়।
মাশা আমিনি একজন কুর্দি। তাকে পশ্চিম ইরানের সাকেজে কবর দেয়া হয়। তারপর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা ভাঙচুর শুরু করে। পুলিশ অনেককে গ্রেপ্তার করে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি আমিনির পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি বিচারবিভাগীয় ও সংসদীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।