হাজার হাজার জীবিত পিঁপড়াকে কেনিয়া থেকে ইউরোপ ও এশিয়ার পোষা প্রাণীর বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে পাচার করার সময় চার চোরাকারবারিকে আটক করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। বন্যপ্রাণী পাচারের জন্য তারা শাস্তির মুখোমুখি হবে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এই ঘটনাকে বন্যপ্রাণী পাচারবিরোধী লড়াইয়ে এক ‘মাইলফলক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে কেনিয়া ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস (কেএডব্লিউএস)।
কেনিয়া বন্যপ্রাণী পরিষেবা (কেডাব্লিউেএস) জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ টেস্ট টিউব এবং সিরিঞ্জে লুকিয়ে রাখা ‘মেসর সেফালোটস’ প্রজাতির জীবন্ত রাণী পিঁপড়া আটক করেছে।
তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘টেস্ট টিউবগুলো দুই মাস পর্যন্ত পিঁপড়াগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে এবং বিমানবন্দরের নিরাপত্তা এড়াতে নকশা করা হয়েছিল।’
গত সোমবার দুই বেলজিয়ান, একজন ভিয়েতনামী এবং একজন কেনিয়ার নাগরিক অবৈধভাবে জীবন্ত বন্যপ্রাণী পাচারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং মঙ্গলবার জোমো কেনিয়াত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আদালতে তারা আবার হাজির হন। আদালত মামলাটি ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত রেখেছে। চোরাচালানকারীরা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিঁপড়া ব্যবসার সঙ্গে জড়িত একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘মেসর সেফালোট’ প্রজাতির পিঁপড়া রপ্তানি করার জন্য কেডাব্লউএস থেকে লাইসেন্স এবং একটি স্বাস্থ্য শংসাপত্রের প্রয়োজন পড়ে। সূত্রটি আরো জানিয়েছে, কেনিয়ার এই প্রজাতিটির চাহিদা অনেক বেশি এবং পাওয়া কঠিন।
বিশেষজ্ঞ ব্রিটিশ খুচরা বিক্রেতা ‘অ্যান্টসরাস’ এ ঘটনাকে আশ্চর্যজনক হিসেবে বর্ণনা করেছে। ‘অ্যান্টসরাস’ জীবন্ত রাণী পিঁপড়ার ডিম, বাচ্চা, পিঁপড়ের খাবার, উইপোকা এবং পিঁপড় সম্পর্কিত সরঞ্জাম সরবরাহকারী। তারা জানিয়েছে, ‘মেসর সেফালোট অনেক মানুষের কাছে স্বপ্নের প্রজাতি।
রাণী পিঁপড়াগুলো প্রায় ২০-২৪ মিমি লম্বা এবং সুন্দর লাল ও বাদামী/কালো রঙের।’
তারা আরো জানিয়েছে, এই প্রজাতির একটি জীবন্ত রানীর দাম ৯৯.৯৯ পাউন্ড (১৩২.৪৪ ডলার)।
কিছু মানুষ পিঁপড়া পছন্দ না করলেও, যারা ভালোবাসেন তারা ‘ফর্মিকেরিয়াম’ নামক একটি বড় বক্সে পিঁপড়া পোষেন। কাঁচের এই বক্সটি স্বচ্ছ, ফলে পিঁপড়াদের জটিল উপনিবেশ তৈরিসহ পিঁপড়ারা কীভাবে আচরণ তা বাইরে থেকে দেখা যায়। ‘ফর্মিকেরিয়া’ মূলত পোষা প্রাণী হিসেবে পিঁপড়াদের উপভোগ করার জন্য নকশা করা হয়।