জরিমানার পর এবার পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ব্রিটেনজুড়ে ২০২০ সালে কোভিড পরিস্থিতিতে লকডাউন ঘোষণা করেছিল জনসনের সরকার। গোটা দেশ যখন লকডাউনে ঘরবন্দি, ঠিক সেই সময় মহামারী আইন ভেঙে জন্মদিন পালন করার অভিযোগ উঠেছিল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে।
সেই বিতর্ক এখনও চলছে। কেন আইন ভেঙে পার্টি করেছেন তার জবাব চেয়ে বিরোধীরা ক্রমাগত চাপ বাড়াচ্ছিল বরিস এবং তার দলের ওপর। সর্বসমক্ষে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবিও তোলেন বিরোধীরা। যদিও বরিস প্রকাশ্যে কখনও পার্টি আয়োজনের কথা স্বীকার করেননি।
তার বিরুদ্ধে লন্ডন পুলিশ তদন্তে নামে। ব্রিটিশ পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ওই সময় একাধিক পার্টি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। দোষী সাব্যস্ত হন বরিস জনসন। অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনকের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ ওঠে। তাদের সকলকেই জরিমানা করা হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই ‘শাস্তি’তে সন্তুষ্ট হননি বিরোধীরা। তারা প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি করেন। একই সঙ্গে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ কাজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলে বিরোধী দল। শেষমেশ চাপের মুখে পড়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন বরিস জনসন।
জন্মদিনের সেই পার্টি প্রসঙ্গে বরিস জনসনের দাবি, মিনিট দশেকের জন্য ক্যাবিনেট রুমে ওই অনুষ্ঠান হয়েছিল। তাকে অভিনন্দন জানাতে ছোট্ট একটা পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল। বরিস বলেন, “সত্যি বলতে তাতে যে বিধিভঙ্গ হচ্ছে, সে সময় বুঝে উঠতে পারিনি।”
এদিকে, পার্লামেন্টে ক্ষমা চাওয়ার পর লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টার্মার বরিস জনসনের এই ক্ষমা প্রার্থনাকে ‘রসিকতা’ বলে অভিহিত করেছেন। শুধু তাই নয়, সব দলের এমপিরাই তার আচরণের সমালোচনা করেছেন।
টোরি এমপি মার্ক হার্পার প্রধানমন্ত্রীকে তার ‘অযৌক্তিক’ এই কর্মের জন্য পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী সংসদকে বিভ্রান্ত করেছেন কিনা এবং কমন্স কমিটির তদন্ত করা উচিত কিনা সে বিষয়ে বৃহস্পতিবার লেবার একটি ভোটের আহ্বান জানিয়েছে।
ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী, জেনেশুনে সংসদকে বিভ্রান্ত করার অপরাধ প্রমাণিত হলে পদত্যাগ করতে হয়।