পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বন্দুকধারীদের গুলিতে কমপক্ষে ২২ জন নিহত হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার (২৬ আগস্ট) ওই হামলার ঘটনা ঘটে। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, তাদেরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় এবং তাদের পরিচয় জানতে চাওয়া হয়। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ওই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বেলুচিস্তান প্রদেশের মুসাখাইল জেলায় স্থানীয় সময় সোমবার (২৬ আগস্ট) ভোরে বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী ওই হামলা চালিয়েছে। ওই প্রদেশে জাতিগত, বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং সাম্প্রদায়িক সহিংসতা দমনে লড়াই করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী।
এদিকে এই হামলার দায় স্বীকার করে এএফপিকে ইমেইলে বার্তা পাঠিয়েছে ওই অঞ্চলের সবচেয়ে সক্রিয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)।
নজিবুল্লাহ কাকার নামে মুসাখাইল জেলার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, পাঞ্জাবকে বেলুচিস্তানের সঙ্গে সংযোগকারী একটি মহাসড়কে একের পর এক বাস, ভ্যান এবং ট্রাক থামিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। তারা প্রায় ২২টি গাড়ি থামিয়েছে। তিনি আরও বলেন, পাঞ্জাব থেকে আসা যানবাহনগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে এবং পাঞ্জাব থেকে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে গুলি করা হয়েছে।
হামলায় ২২ জন নিহত হয়েছেন যাদের বেশিরভাগই পাঞ্জাবি শ্রমিক। এছাড়া দুজন আধা সামরিক সৈন্যও নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন তিনি। জেলার আরেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হামেদ জেহরিও এএফপিকে হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের কার্যালয় থেকে সোমবার জারি করা এক বিবৃতিতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় গভীর শোক ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়েছে।
বিএলএ দাবি করেছে যে, নিহতরা সবাই বেসামরিক পোশাক পরা সামরিক বাহিনীর সদস্য ছিলেন। তাদের যোদ্ধারা সবাইকে চিহ্নিত করেছে এবং পরবর্তীতে তাদের হত্যা করা হয়। যদিও এ ব্যাপারে তারা কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।
বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ থাকা সত্ত্বেও বেলুচিস্তান পাকিস্তানের সবচেয়ে দরিদ্র প্রদেশ হিসেবে পরিচিত। গত কয়েক বছরে পাকিস্তানের অন্য জায়গা থেকে এই অঞ্চলে কর্মরত পাঞ্জাবি, সিন্ধু এবং বিদেশি বিভিন্ন সংস্থাগুলোর ওপর ক্রমাগত হামলা চালাচ্ছে বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। তাদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে তাদের শোষণ করা হচ্ছে।
এর আগে গত এপ্রিলে একই ধরনের হামলায় বেলুচিস্তানের নৌশকি শহরে বাস থেকে অপহরণ করার পর ১১ জন পাঞ্জাবি শ্রমিক নিহত হন।