সমরাস্ত্র তৈরি করতে রাশিয়া ৪৫০টির বেশি উপকরণ বা যন্ত্রাংশ পশ্চিমা দেশগুলো থেকে এনেছে। গবেষণায় উঠে এসেছে, যুদ্ধক্ষেত্রে জব্দ হওয়া রুশ অস্ত্রের অন্তত ২৭টিতে পশ্চিমা যন্ত্রাংশের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
লন্ডনভিত্তিক প্রতিরক্ষাবিষয়ক থিংক ট্যাংক রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউট (আরইউএসআই) জানিয়েছে, রুশ অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহার হওয়া যন্ত্রাংশগুলোর দুই–তৃতীয়াংশই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানিগুলোর। এ ছাড়াও জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসের কোম্পানির তৈরি যন্ত্রাংশও ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে ফেলে যাওয়া রুশ অস্ত্রে পাওয়া গেছে।
আরইউএসআই বলছে, সমরাস্ত্র তৈরিতে পশ্চিমা দেশগুলো থেকে আনা মাইক্রোচিপ ও প্রযুক্তি ব্যবহার করছে রাশিয়া। বিষয়টি বুঝতে পশ্চিমা দেশগুলো অনেক দেরি করে ফেলেছে।
আরইউএসআই এর গবেষক ও অস্ত্র বিশেষজ্ঞ জ্যাক ওয়াটলিং বলেন, অস্ত্র ও গোলাবারুদ তৈরিতে রাশিয়া পশ্চিমা যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। এসব অস্ত্র ইউক্রেনে হাজারো সাধারণ মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ায় অস্ত্র তৈরির যন্ত্রাংশ ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি রপ্তানিতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি দাবি জানিয়েছে আরইউএসআই।
ইনটেল করপোরেশসহ আরও কয়েকটি কোম্পানি জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর মস্কোর সঙ্গে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে তারা। তাদের যন্ত্রাংশ দিয়ে বানানো অস্ত্র ইউক্রেনে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর কারণ হোক, এটা তারা চায় না।
২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া ইউক্রেনে রুশ হামলায় হাজারো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। চলমান যুদ্ধে রুশ বাহিনী ৩ হাজার ৬৫০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড ডিফেন্স কাউন্সিল। পশ্চিমা যন্ত্রাংশে নির্মিত রুশ ক্ষেপণাস্ত্রে যেমন বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তেমনি ধ্বংস হয়ে গেছে শপিং সেন্টার, হাসপাতাল, স্কুলসহ অনেক বেসামরিক স্থাপনা।
গবেষণায় বলা হয়েছে, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার জেরে মাইক্রোচিপসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েছে রাশিয়া। জাপান, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সহজেই চিপ আনা যাবে ভাবলেও এসব দেশ মস্কোর সঙ্গে চিপসহ যন্ত্রাংশ বাণিজ্য গুটিয়ে এনেছে। রাশিয়ার ব্যবসায়ীরা চিপ আমদানিতে এখন হংকংয়ের ওপর ঝুঁকেছেন।
তবে এসব নিয়ে রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য জানায়নি।