অবিরাম বৃষ্টিতে নেপালে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছে আরও বহু মানুষ। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গত তিনদিন ধরে অবিরাম বর্ষণে দেশজুড়ে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে শনিবার রাত পর্যন্ত অন্তত ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই দুর্যোগে আরও ৬৮ জন নিখোঁজ রয়েছে।
শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ৯৯ জনের মৃত্যু, ৬৮ জন নিখোঁজ এবং আরও ১০০ জন আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
তবে স্থানীয় প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্টের সংবাদদাতাদের প্রাপ্ত তথ্য এবং নেপাল পুলিশ ও সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর সদর দফতরের নিশ্চিত হওয়া তথ্যে দেশব্যাপী ১১২ জন মারা গেছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ললিতপুরে কমপক্ষে ২০, ধাদিংয়ে ১৫, কাভরে ৩৪, কাঠমান্ডুতে ১২, মাকাওয়ানপুরে ৭, ভক্তপুর ও পাঁচথারে ৫, সিন্ধুপালচোকে ৪, দোলাকায় ৩, ধনকুটায় ২ জন প্রাণ হারিয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, পাঁচথার, ঝাপা, মহোত্তারি, কাঠমান্ডু, ললিতপুর, কাভরে, সিন্ধুলি, ধাদিং, সিন্ধুপালচোক, দোলাখা এবং রূপানদেহি জেলায় অন্তত ৬৮ জন নিখোঁজ রয়েছে।
কাঠমান্ডু পোস্ট বলছে, বন্যা এবং ভূমিধসের জেরে পার্বত্য এই দেশটির অনেক অংশে মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেক মহাসড়ক ও রাস্তার চলাচল ব্যাহত হয়েছে। শত শত বাড়ি ও সেতু চাপা পড়েছে বা বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে শত শত পরিবার। সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বিভিন্ন স্থানে হাজার হাজার মানুষ আটকা পড়েছে।
বন্যা ও ভূমিধসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশটির মধ্য ও পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলো। কাঠমান্ডু উপত্যকায় কমপক্ষে ৩৭ জন মারা যাওয়ার পাশাপাশি বিশাল ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে। জাতীয় রাজধানী কাঠমান্ডুর সাথে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সংযোগকারী সমস্ত হাইওয়ে এবং সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
শনিবার কাঠমান্ডু উপত্যকায় ১৯৭০ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মূলত ওই বছর থেকেই দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি প্রথম দেশে বৃষ্টিপাত পরিমাপ এবং রেকর্ড রাখার ব্যবস্থা শুরু করেছিল।
এছাড়া ধাদিংয়ের ত্রিভুবন মহাসড়কের পাশে ঢ্যাপলে খোলায় ভূমিধসে কমপক্ষে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মৃতদেহ ধ্বংসাবশেষে চাপা পড়া দুটি বাস থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পরে তাদের ময়নাতদন্তের জন্য মহারাজগঞ্জের টিইউ টিচিং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।