বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ, জোরপূর্বক গর্ভপাত, বিনা বিচারে জেল, নির্যাতন, বন্দীদের এতোটাই ক্ষুধার্ত রাখা যাতে কেউ কেউ পোকামাকড় পর্যন্ত খেতে বাধ্য হয়।
এগুলো হচ্ছে, উত্তর কোরিয়ার কারাগার এবং অন্যান্য বন্দি নিবাসগুলোর সাধারণ চিত্র। সাবেক বন্দীদের সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে চলতি সপ্তাহে একটি মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থার তাদের নতুন প্রতিবেদনে এই চিত্র হাজির করেছে।
সরকারি নথি, স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবি, স্থাপত্য বিশ্লেষণ এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ডিজিটাল মডেলসহ কারগার থেকে বেঁচে ফেরা শত শত সাবেক বন্দী প্রত্যক্ষদর্শী এবং নির্যাতন চালিয়েছে এমন অপরাধীদের সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে অলাভজনক বেসরকারি সংস্থা কোরিয়া ফিউচার এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এতে দেশটির গোপন কারাব্যবস্থার ভিতরে জীবনের সবচেয়ে বিশদ চিত্র তুলে আনা হয়েছে।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, কারাগারগুলোতে হাজারেরও বেশি নির্যাতন এবং অমানবিক আচরণ, শত শত ধর্ষণ ও অন্যান্য ধরণের যৌন সহিংসতার ঘটনা এবং জীবনের অধিকার অস্বীকার করার মতো শতাধিক ঘটনা ঘটেছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, একটি কারাগারে সাত বা আট মাসের গর্ভবতী একজনকে গর্ভপাতে বাধ্য করা হয়েছিল; অন্য একজনকে দিনে ৮০ গ্রাম ভুট্টা দেওয়া হতো। অতিকম এই খাবারের ফলে ওই বন্দীর ওজন এক মাসের মধ্যে ৬০ কেজি থেকে কমে ৩৭ কেজিতে নেমে আসে। এক পর্যায়ে তাকে পরিপূরক হিসেবে তেলাপোকা এবং ইঁদুর খেতে বাধ্য করা হতো। তৃতীয় একজনকে দৈনিক ১৭ ঘণ্টা কঠোর চাপের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য করা হতো। ৩০ দিন তাকে এভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য জীবিত ব্যক্তিরা, যারা সিএনএনের সাথে কথা বলেছিল, তারা জানিয়েছে, কারাগারে তারা পশুর খাদ্যে বেঁচে ছিল। অনেকে কঙ্কালের মতো পাতলা হয়ে গিয়েছেন। কেউ কেউ বন্দী নারীদের ধর্ষণের শিকার হতে দেখেছেন।