রেশন দুর্নীতি মামলায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূল নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ শাহাজাহান শেখের বাড়িতে অভিযানে গিয়ে স্থানীয়দের বিপুল ক্ষোভের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) ও কেন্দ্রীয় সুরক্ষা বাহিনী সিআরপিএফ সদস্যরা। বি
ক্ষোভকারীদের হাতে রীতিমত হেনস্তা হতে হয় ইডি কর্মকর্তাদের। মাথা ফাটে তিন ইডি কর্মকর্তার। ভাঙ্গা হয় ইডির গাড়ি। মারমুখী জনতার হাত থেকে পালিয়ে প্রাণে বেঁচে গেছেন বলে অভিযোগ করেন ইডি কর্মকর্তারা।
এছাড়াও এ বিষয়ে খবর সংগ্রহ করতে আক্রান্ত হয়েছেন বেশ কিছু সংবাদ কর্মীও। যে তিন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন তাদের মধ্যে একজন হলেন সহকারি ডিরেক্টর রাজকুমার রাম। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সেখানে তার সিটি স্ক্যান করানো হয়। আহত আরো দুই কর্মকর্তার নাম অঙ্কুর এবং সোমনাথ দত্ত। ইডি সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই ঘটনার পর চারটি ল্যাপটপ, দুটি মোবাইল ও নথিপত্রসহ একটি ব্যাগ হারিয়ে গেছে।
এই ঘটনার পর রাজ্যজুড়ে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে। ঘটনার পরেই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কড়া বার্তা দিয়েছেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, হিংসা বন্ধ করা সরকারের দায়িত্ব। সরকার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে সংবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজ্যপালের এই কড়া ভূমিকা দেখার পর পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে ঘটনার তদন্তে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) সহায়তা চেয়েছেন।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিজের পোস্টটি তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-কে ট্যাগ করে লিখেছেন, শেখ শাহজাহানের মতো সমাজবিরোধীরা রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে সন্ত্রাস কায়েম করার চেষ্টা করছে। দ্রুত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সেই পোষ্টে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছবিও পোস্ট করেন তিনি।
এদিকে ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, এই হামলার পেছনে রোহিঙ্গাদের হাত আছে। পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। যত দ্রুত সম্ভব রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন দরকার।
অপরদিকে তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে পাল্টা ভারতীয় জনতা পার্টির দিকে দায় ঠেলে দিয়ে বলেন, মানুষতো এখন ইডি-সিবিআইকে বিজেপি হিসেবে দেখছে। তাছাড়া এখন ইডি বা সিবিআই কোথাও গেলে রাজ্য সরকার বা রাজ্য সরকারের পুলিশকে জানাচ্ছেন না। অন্তত মুখ্যসচিবকে যদি বলে রাখে তাহলে তো হয়। কোন এলাকা সংবেদনশীল কোন এলাকায় কি আছে তা না জেনে নিজেদের মতো করে চলে যাচ্ছে। সে কারণেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। একটি শান্তিপূর্ণ রাজ্যকে বদনাম করতে এসব করা হচ্ছে।