ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান হামলার কেন্দ্রবিন্দু দনবাসে বাছবিচারহীনভাবে চলছে ধ্বংসলীলা। বেসামরিক অবকাঠামোগুলোও রুশ হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। গত বুধবারও অন্তত ৪০টি শহরে রুশ বাহিনী গোলা নিক্ষেপ করেছে। এতে অন্তত পাঁচ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছে।
রুশ হামলায় ধ্বংস হয়েছে দনবাসের প্রায় ৪৭টি বেসামরিক স্থাপনা। সেখানে যুদ্ধের তীব্রতা ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ে’ বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিজে।
দোনবাসে রুশ হামলার তীব্রতা সবচেয়ে বেশি সেভেরোদোনেত্স্ক শহর ঘিরে। শহরটির তিন দিক এরই মধ্যে রুশ বাহিনী ঘিরে ফেলেছে। বাকি রয়েছে শুধু পশ্চিম দিক।
পাশাপাশি ক্রামাতোরস্ক শহরেও বেসামরিক নাগরিকরা আটকে পড়েছে। দুই শহরের বাসিন্দারা নিজেরাই পালানোর চেষ্টা করছে। কোনো রকমে একটা ব্যাগ গুছিয়ে কপর্দকশূন্য অবস্থায় তারা রাস্তায় নামছে, কিন্তু জানে না গন্তব্য।
সেভেরোদোনেত্স্ক ও ক্রামাতোরস্ক শহর দুটিতে রুশ বাহিনী যেন ‘সব জ্বালিয়ে দেওয়ার নীতি’ গ্রহণ করেছে, এমনটাই বলছেন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা। একই কথা বলছে সাধারণ মানুষ।
ক্রামাতোরস্ক শহরের বাসিন্দা ১৩ বছরের শিশু ইউজিন বলে, ‘ইউক্রেনে কোনো জায়গাই আর নিরাপদ নয়। রুশরা সব কিছুতে আঘাত করছে। তারা কোনো পরোয়াই করছে না। ’
রুশ বাহিনী কতটা বেপরোয়া হামলা চালাচ্ছে, সেটা তুলে ধরে বৃদ্ধ গেনাদি বলেন, তাঁর পাঁচ বছরের নাতি আর পাঁচ মাসের নাতনিকে নিয়ে তাদের বাবা শহর ছেড়ে পালাতে পেরেছে ‘ভাগ্য জোরে’। গেনাদি বলেন, ‘আমার জামাতা এই মাত্র আমার মেয়েকে কবর দিয়ে গেল। ওর যদি কিছু হয়ে যায়, তবে আমার নাতি-নাতনিরা এতিম হয়ে যাবে। ’
ইউক্রেনের উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী গানা মালিয়ার বৃহস্পতিবার দনবাস যুদ্ধ সম্পর্কে বলেন, ‘যুদ্ধের তীব্রতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। শত্রুপক্ষ আমাদের সেনাদের অবস্থান লক্ষ্য করে বিভিন্ন দিক থেকে একযোগে হামলা চালিয়ে তছনছ করে দিচ্ছে। আমরা চরম কঠিন পরিস্থিতিতে আছি। আমাদের সামনে রয়েছে দীর্ঘ যুদ্ধ। ’