ভারতের অনলাইন এনডিটিভির এক খবরে বলা হয়েছে, ত্রিপুরায় সাম্প্রতিক সহিংসতা নিয়ে রিপোর্ট করার কারণে দু’জন নারী সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন সমৃদ্ধি সাকুনিয়া এবং স্বর্ণা ঝা। রোববার সকালের দিকে অভিযোগ করেন, তারা যে হোটেলে অবস্থান করছিলেন, সেখানে পুলিশ গিয়ে তাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করেছে।
তারা তাদেরকে শাসিয়ে এসেছে রাজ্যের সাম্প্রতিক সহিংসতা নিয়ে রিপোর্ট করার কারণে। রাজ্যের উগ্র ডানপন্থি গ্রুপ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের একজন সমর্থক কাঞ্চন দাস তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার পরই এসব ঘটনা ঘটেছে। তাদের বিরুদ্ধে ভারতের দ-বিধির ১৫৩-এ অনুচ্ছেদ, ১২০(বি) অনুচ্ছেদের অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছে।
বলা হয়েছে এই দুই সাংবাদিক ধর্মের ভিত্তিতে বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন।এনডিটিভি আরো লিখেছে, গ্রেপ্তারের আগে মিস সাকুনিয়া এক টুইটে অভিযোগ করেছেন যে, তাদেরকে হোটেল থেকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না। সূত্রগুলো বলেছে, একদল পুলিশ তাদেরকে শুধু একটি নোটিশ দিয়েছে।
এরপর তাদেরকে ২১ শে নভেম্বর জিজ্ঞাসাবাদে উপস্থিত হতে বলে যায়। একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, একটি এফআইআরের ভিত্তিতে রোববার ওই সাংবাদিকদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে গিয়েছি আমরা। ত্রিপুরা উত্তরের ধর্মনগর সাব-ডিভিশনে একটি হোটেলে অবস্থান করছিলেন তারা। আমরা অনুমতি নিয়ে তাদের সঙ্গে মৌলিক তথ্যের ভিত্তিতে কথা বলেছি। তাদেরকে একটি নোটিশ দিয়েছি। এ সময় তারা আমাদের কাছে কিছু সময় চান, যাতে তারা তাদের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে পারেন। তাদেরকে সেই সময় দেয়া হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, এরই মধ্যে তারা সেখান থেকে চলে গিয়েছেন।
ওদিকে ত্রিপুরায় সংঘর্ষের ঘটনায় মহারাষ্ট্রে বড় বিক্ষোভ হয়েছে। এর ফলে শনিবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গোমতি জেলায় একটি মসজিদ ভাঙার খবর প্রত্যাখ্যান করেছে। এদিন ধারাবাহিক টুইট করেন মিস ঝা। তিনি তাতে দাবি করেন, ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদ নিয়ে তারা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ সময় তিনি এফআইআরের একটি কপি শেয়ার করেন। আরেকটি টুইটে তিনি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের র্যালির কথা উল্লেখ করেন। তাতে তিনি স্থানীয়দের অভিযোগ তুলে ধরেন। তাতে বলা হয়, উগ্র ডানপন্থি গ্রুপটির সঙ্গে এই ঘটনার সম্পর্ক আছে। রোববার সকালেও টুইট করেছেন তিনি। এতে বলেছেন, আমরা রাজধানী আগরতলার উদ্দেশে হোটেল ত্যাগ করার পথে ছিলাম। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ সহায়তা করা সত্ত্বেও আমাদেরকে বের হতে দেয়া হয়নি। হোটেলের বাইরে ১৬ থেকে ১৭ জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ত্রিপুরায় ভীতি প্রদর্শনের ঘটনায় আমি শিগগিরই বিবৃতির মাধ্যমে জানাবো। তার আগে আমরা আইনী প্রতিকার খুঁজছি। আমাদেরকে হোটেল থেকে বাইরে যেতে দেয়া হচ্ছে না।
সূত্র বলেছে, মিথ্যা খবর ছড়িয়ে দেয়ার মামলায় তাদের দু’জনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। বিজেপি শাসিত এই রাজ্যে মসজিদ ভাঙচুরের রিপোর্ট শনিবার প্রত্যাখ্যান করেছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভুয়া এবং উস্কানিমূলক পোস্ট দেয়ার কয়েক শত একাউন্ট সম্পর্কে ফেসবুক, টুইটার এবং ইউটিউব কর্তৃপক্ষের কাছে গত সপ্তাহে বিস্তারিত জানতে চেয়েছে ত্রিপুরা পুলিশ। সম্প্রতি প্রায় ডজনখানেক মামলা হয়েছে কমপক্ষে ৭০ জনের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে আছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, অধিকারকর্মী ও ধর্মীয় নেতা।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন