চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশে রেকর্ড তাপপ্রবাহ চলছে। সেখানকার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। বাসিন্দারা তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে বিভিন্ন সৃজনশীল পন্থা অবলম্বন করছে। চংকিং এবং পার্শ্ববর্তী সিচুয়ানের বাসিন্দারা তাপ থেকে রক্ষা পেতে মাটির নিচে বাংকার এবং পাতাল রেস্তোরাঁগুলোতে ভিড় করছে।
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য সিচুয়ানের সরকারি অফিসগুলোতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের মাত্রা ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম রাখতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া চংকিং শিল্প সংস্থাগুলো কমপক্ষে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আউটপুট সীমাবদ্ধ রাখতে বলেছে। এসবের পরিবর্তে অনেক কম্পানি তাদের অফিসের তাপমাত্রা ঠাণ্ডা করতে বরফের বড় ব্লক ব্যবহার করছে বলে জানা গেছে।
কর্মক্ষেত্রের বাইরে অনেক মানুষ ডিনারের সময় গরম থেকে বাঁচতে মাটির নিচে চলে যাচ্ছে। ‘গুহা হটপট’ রেস্তোরাঁগুলোতে গরমের সময় মানুষের আনাগোনা বেশ বেড়ে যায়। কারণ মাটির নিচে তাপমাত্রা কম থাকে। কিন্তু বর্তমানে এগুলোই মানুষের কাছে প্রধান অবলম্বন হয়ে উঠেছে।
চায়না ডেইলি শনিবার জানিয়েছে, বাইরে যখন ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল তখন একটি গুহা হটপট রেস্তোরাঁয় তাপমাত্রা ছিল ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
টুইটারে মান্য কোয়েটসে নামে একজনের পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যায়, বিদ্যুৎ না থাকায় লিফট চলছে না। তাই মানুষ খাবার অর্ডার করার পর ২৫ তলার ওপর থেকে দড়ি দিয়ে খাবার সংগ্রহ করছে। ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
অনেকে আবার মাটির নিচে টানেলগুলোতে আশ্রয় খুঁজছে। অনেকেই সেখানে মাদুর বিছিয়ে বা বিমের সাথে হ্যামক ঝুলিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে এই দাবদাহের ফলে সৃষ্ট খরায় কৃষি উৎপাদনকারীরা বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটি ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, একজন মুরগি খামারি কাঁদছেন। কারণ গরমের দিনে বিদ্যুৎবিভ্রাটের জন্য তার মুরগিগুলো এক রাতের মধ্যে মারা গেছে।
দেশটির বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সিচুয়ান প্রদেশের কিছু অংশ বৃহস্পতিবার সারা রাতের ভারি বৃষ্টির ফলে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে। তবে গণমাধ্যমের হিসাবে প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে ঝড়ের কারণে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে হয়েছে।
এই অঞ্চলগুলোর পাশাপাশি বাণিজিক কেন্দ্র সাংহাইয়ের আশপাশের প্রদেশগুলোতে কমপক্ষে আগামী তিন দিন গরম আবহাওয়া অব্যহত থাকবে বলে জানিয়েছে চীনের আবহাওয়া প্রশাসন।