বাখমুতে রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই করছে ইউক্রেনীয়রা। দোনবাসের এ শহরটির মতো আগে দেশটির বহু শহর দখল নেওয়ার জন্য কিয়েভের সেনাদের সঙ্গে সম্মুখ সমরে লড়েছে পুতিন বাহিনী। কোথাও পেরে উঠেছে, কোথাওবা পারেনি।
গত সেপ্টেম্বরে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল গণভোটের মাধ্যমে দখলে নিয়েছে মস্কো। তবে এখনো শেষ হওয়ার কোনো ইঙ্গিত নেই।
দ্য কনভার্সেশন’র এক প্রতিবেদনে যুদ্ধের প্রকৃতি বিচার বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে, তিনদিকে মোড় নিতে পারে ইউক্রেন যুদ্ধ।
দৃশ্যপট ১: রাশিয়া পিছু হটতে পারে
সম্প্রতি দোনবাস ও খেরসনে রাশিয়ার হামলা ব্যর্থ হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে দখলকৃত চার প্রদেশে ইউক্রেনের হামলায় অনেক মানুষ হতাহত ও অসংখ্য ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়েছে। সম্প্রতি জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করেছে মস্কো। এতে বোঝা যায় যুদ্ধে পরাজয়ের সন্নিকটে অবস্থান করছে রাশিয়া।
এছাড়াও ইউক্রেনে পর্যাপ্ত গোলাবারুদ আর অস্ত্র সরবরাহ করছে মিত্র দেশগুলো; যা দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে জেলেনস্কি বাহিনী।
দৃশ্যপট ২: বিজয়ী হতে পারে রাশিয়া
প্রথম দৃশ্যপটের বিপরীত ঘটনাও ঘটতে পারে ইউক্রেন যুদ্ধে। পরাজয় বরণ করে নিতে হতে পারে ইউক্রেনকে। কারণ হিসেবে কয়েকটি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে দ্য কনভার্সেশনের প্রতিবেদনে।
প্রথমত, শীতের শেষে ইউক্রেনে রুশ হামলা তীব্র হয়েছে। দ্বিতীয়ত, খেরসনের অনেক এলাকা দখলে নিয়েছে মস্কো। তৃতীয়ত, বেলারুশ থেকে ইউক্রেনের ওডেসা দিয়ে হামলার হুমকি দিয়েছে রাশিয়া।
চতুর্থত, গত বছরের শেষদিকে মস্কো নতুন করে ময়দানে যেসব সেনা মোতায়েন করেছে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে মাঠে নামানো হয়েছে।
পঞ্চমত, সম্প্রতি জেলেনস্কি সরকারকেও এক ধরনের গোলযোগের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন ব্যক্তিকে দুর্নীতির জন্য বরখাস্ত করেছে তার সরকার।
দৃশ্যপট ৩: দীর্ঘায়িত হতে পারে যুদ্ধ
ইউক্রেন যুদ্ধ বেশ কয়েক বছর ধরে চলতে পারে। একদিকে ইউক্রেনের বিভিন্ন জায়গা দখলের চেষ্টা করবে রাশিয়া, অন্যদিকে পুতিন বাহিনীকে পিছু হটানোর চেষ্টা করবে ইউক্রেন। তবে কোনো পক্ষই তীব্র লড়াইয়ে শামিল হবে না।
যুদ্ধ দীর্ঘ হওয়ার জন্য পশ্চিমা সহায়তাও অনেকটা দায়ী। তাদের সহায়তা না থাকলে অনেক আগেই হেরে যেত ইউক্রেন, দাবি দ্য কনভার্সেশনের।
যুদ্ধে লিপ্ত কোনো পক্ষ এখনো নিজেদের জয়ী ভাবতে পারেনি। রাশিয়ার কাছে এখনো বিজয় স্পষ্ট না, কারণ দখলকৃত চার অঞ্চলে এখনো কেউ স্বীকৃতি দেয়নি এবং ইউক্রেনও তা মেনে নেয়নি। অন্যদিকে সেই অঞ্চল ফিরিয়ে আনতে মরিয়া ইউক্রেন।