তাইওয়ানে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতের পর সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ৪৪ মিনিটে আঘাত হানে এ ভূকম্পন। মার্কিন ভূতাত্ত্বি জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্যমতে, তাইওয়ান ছাড়াও ভূমিকম্পের প্রভাব অনুভূত হয়েছে প্রতিবেশী চীন, জাপান, ফিলিপাইনেও।
ইউএসজিএসের বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, রোববার দক্ষিণ-পূর্ব তাইওয়ানে আঘাত হানা ৬ দশমিক ৯ মাত্রার একটি ভূমিকম্পের কারণে ৩০০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে উপকূলরেখা বরাবর বিপজ্জনক সুনামির আশঙ্কা রয়েছে।
ভূমিকম্পের পর জাপানের আবহাওয়া সংস্থাও পূর্ব চীন সাগরের মিয়াকো দ্বীপের জন্য সুনামি সতর্কতা জারি করেছিল। কিন্তু পরে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল তাইওয়ানের হুয়ালিয়েন কাউন্টির ফুলি শহর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে এবং কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। অগভীর ভূমিকম্পে সাধারণত ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বেশি থাকে।
ইউএসজিএস প্রাথমিকভাবে ভূমিকম্পটির মাত্রা ৭ দশমিক ২ জানিয়েছিল। পরে তা কমিয়ে ৬ দশমিক ৯ বলে জানানো হয়।
শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে তাইওয়ানের দক্ষিণাঞ্চলে বেশ কিছু ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এগুলোর ছবি ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন মাধ্যমে।
দ্বীপটির সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (সিএনএ) জানিয়েছে, একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে তিনজন আটকা পড়েছেন। চতুর্থ ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে।
তাইওয়ান রেলওয়ে প্রশাসন জানিয়েছে, ওই এলাকায় একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার পরে প্রায় ২০ যাত্রীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন ভূমিকম্পের পর সেন্ট্রাল ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার সক্রিয় করেছেন। দ্বীপের বাসিন্দাদের সম্ভাব্য আফটারশক এড়াতে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
দুটি টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলের কাছে অবস্থিত হওয়ায় খুবই ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা তাইওয়ান। গত জুন মাসেও দেশটির পূর্ব উপকূলে আঘাত হেনেছিল ছয় মাত্রার এক ভূমিকম্প। এতে কেউ হতাহত হননি।
গত মার্চে দ্বীপটিতে আঘাত হানে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প। এতে পূর্বাঞ্চলে একটি অর্ধনির্মিত সেতু ধসে পড়ে।
২০১৮ সালে দেশটির জনপ্রিয় পর্যটন শহর হুয়ালিয়েনে আঘাত হেনেছিল ৬ দশমিক ৪ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প। এতে অন্তত ১৭ জন প্রাণ হারান, আহত হন আরও ৩০০ জন।
২০১৬ সালে তাইওয়ানের দক্ষিণাঞ্চলে এক ভূমিকম্পে মারা যান শতাধিক মানুষ। আর ১৯৯৯ সালে দ্বীপটিতে ৭ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রাণহানি হয়েছিল দুই হাজারের বেশি।