তাইওয়ান প্রণালীতে যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাইওয়ানের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার দুই সপ্তাহ আগেই বুধবার তাইওয়ান প্রণালীতে উত্তরণ করেছে এ মার্কিন যুদ্ধজাহাজ। এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বেইজিং।
চীন গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ানের ওপর সার্বভৌমত্ব দাবি করে তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ডের একটি অংশ বলে মনে করে। যে কারণে চীন এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে বরাবরই সতর্কতা দেখিয়ে আসছে। অন্যদিকে তাইওয়ান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এটিকে একটি আন্তর্জাতিক জলপথ হিসেবে বিবেচনা করে।
মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও মাঝে মাঝে মার্কিন নৌবাহিনীর টহল বিমান প্রতি মাসে অন্তত একবার তাইওয়ান প্রণালী দিয়ে বা সরাসরি তাইওয়ানের ওপর দিয়ে যায়।
আন্তর্জাতিক কোনও আইন ভাঙা হয়নি দাবি করে মার্কিন নৌবাহিনীর ৭ম নৌবহর জানায়, আর্লে বার্ক শ্রেণির গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস হ্যালসি বুধবার পানির মধ্য দিয়ে একটি রুটিন তাইওয়ান স্ট্রেইট ট্রানজিট পরিচালনা করেছে।
তাইওয়ানে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর তীব্র সমালোচনা করেছে চীন। চীনা সামরিক বাহিনী এটিকে একটি দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করেছে। তবে সমুদ্রযাত্রার সময় মার্কিন জাহাজকে পর্যবেক্ষণ ও সতর্ক করার জন্য নৌ ও বিমান বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল বলেও জানায় তারা।
পিপলস লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড এক বিবৃতিতে বলেছে, থিয়েটারে সৈন্যরা সবসময় সতর্ক থাকে। জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তার পাশাপাশি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করতে তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মার্কিন জাহাজটি প্রণালী দিয়ে দক্ষিণে যাত্রা করেছে এবং তাইওয়ান বাহিনী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে। এসময় অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়েনি।
সেইসঙ্গে তাইওয়ান সরকার বেইজিংয়ের সার্বভৌমত্বের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, শুধুমাত্র দ্বীপের জনগণই তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে।
এদিকে বর্তমানে ভাইস প্রেসিডেন্ট লাই বারবার চীনের সাথে কথা বলার প্রস্তাব দিয়েছেন কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। উদ্বোধনের আগে এবং পরে দ্বীপের চারপাশে যেকোনও চীনা সামরিক কৌশলের জন্য তাইওয়ান সতর্ক রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত চার বছরে চীনের সামরিক বাহিনী তাইওয়ানের আশেপাশে তার কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করেছে। এর মধ্যে অন্যতম ছিল প্রলালীর মধ্যরেখার ওপর যুদ্ধবিমান উড্ডয়ন করা। কারণ রাজনৈতিকভাবে চীন এই মধ্যরেখার অস্তিত্ব স্বীকার করে না।