English

19 C
Dhaka
সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
- Advertisement -

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘রানিং মেট’ কে এই জেডি ভান্স?

- Advertisements -
ডোনাল্ড ট্রাম্পের মোটেও সমর্থক ছিলেন না তার রানিং মেট জেডি ভান্স। ২০১৬ সালে এক্স হ্যান্ডেলে এবং সাক্ষাৎকারের সময় ট্রাম্পকে পছন্দ করেন না বলেও মন্তব্য করেছিলেন। এটা সেই সময়ের ঘটনা যখন স্মৃতিকথা ‘হিলিবিলি এলেজি’র হাত ধরে সদ্য বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন তিনি। এমিনকি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘আমেরিকান হিটলার’ বলেও মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছিল তাকে।
এককালে ট্রাম্পের ‘কড়া সমালোচক’ হিসেবে পরিচিত ৪০ বছর বয়সী সেই ভান্স প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের রানিং মেট হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের জন্য ভোটের ময়দানে লড়ছেন এখন। যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইয়োর এই সেনেটরের পরিবর্তন অনেককেই অবাক করেছে। 

তবে ভান্স প্রচারাভিযানের সময় রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে নিজেকে ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন। বিরোধীদের আক্রমণাত্মক সমালোক হিসেবেও বেশ কড়া অবস্থানে রয়েছেন।একজন ‘রানিং মেট’-এর ভূমিকা তিনি বেশ দক্ষতার সঙ্গে পালন করছেন।  নিয়মিতভাবে টেলিভিশন শো-তে অংশগ্রহণ করেছেন, বিতর্ক অনুষ্ঠানে দেখা যাচ্ছে তাকে।

জন্ম ও বেড়ে ওঠা

ভান্সের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইয়োর মিডলটাউনে। তার ছেলেবেলার অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর ছিল না।

তার বাবা জেমস ডোনাল্ড বোম্যান যখন বাড়ি ছাড়েন, তখন ভান্সের বয়স খুবই কম। এদিকে মাও লড়ছিলেন মাদকাসক্তির সঙ্গে। এমন পরিস্থিতিতে তিনি প্রায়ই দাদা-দাদির বাড়িতে আশ্রয় নিতেন। পরে জেডি ভান্সকে তার দাদা-দাদী দত্তক নেন। বর্তমানে তাদের পদবিটাই ব্যবহার করেন ভান্স।

মিডলটন হাইস্কুল থেকে ভান্স পাশ করার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিন কর্পসে যোগ দেন। পরে ইরাকে মোতায়েন করা হয় তাকে। এরপর ওহাইয়ো স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং ইয়েল ল স্কুল থেকে পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে ক্যালিফোর্নিয়ায় বিনিয়োগকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। জেডি ভান্সের বেড়ে ওঠা এবং তার ব্যক্তিত্ব শ্রমজীবী ভোটারদের আকৃষ্ট করতে পারে ভেবেই তাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প মনোনীত করেছেন বলে ধারণা করা হয়।

স্ত্রী ঊষা ভান্সও তার ক্যারিয়ারে সফল। তিনি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসের কেরানি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বর্তমানে মুঙ্গার, টোলস অ্যান্ড ওলসন নামক শীর্ষস্থানীয় ল ফার্মের অংশ ছিলেন। তবে ট্রাম্প জেডি ভান্সকে তার রানিং মেট হিসেবে মনোনীত করার পর ওই প্রতিষ্ঠান থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।

ভান্সের স্ত্রী ঊষা চিলুকুরি ভারতীয় বংশোদ্ভূত। ২০১৩ সালে ইয়েল ইউনিভার্সিটিতে পড়াকালীন তাদের পরিচয় হয়। নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইয়েল ল স্কুলে পড়ার সময় ‘শ্বেতাঙ্গ-অধ্যুষিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সামাজিক অবক্ষয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তাদের প্রথম দেখা হয়। ২০১৪ সালে বিয়ে করেন এই যুগল। এই দম্পতির তিনটি সন্তান রয়েছে।

ট্রাম্পের রানিং মেট

ওয়াশিংটন পোস্টের কাছে থাকা টেক্সট বার্তা অনুসারে, ২০২০ সালের শেষের দিক পর্যন্ত ট্রাম্পের বিষয়ে সংশয় ছিল ভান্সের। চার বছর আগে ভান্স লিখেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ‘তার অর্থনৈতিক জনপ্রিয়তা (একটা বিচ্ছিন্ন চীন সম্পর্কিত নীতি ছাড়া) বাস্তবায়িত করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন’ এবং ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদ হারাবেন।

তবে সেনেটের জন্য প্রচারের সময় তার আগের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন ভান্স। এভাবে ভান্স ট্রাম্পের এবং ক্রমশ রিপাবলিকানদের সমর্থন পেতে সক্ষম হন যা তাকে সেনেটে যেতে সাহায্য করে।

একইসঙ্গে ভান্স ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ রাজনীতির একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হয়ে ওঠেন এবং প্রায় সম্পূর্ণভাবেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির সঙ্গে তাকে সহমত পোষণ করতেও দেখা যায়। ফলে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর হিসেবে বিবেচিত এই পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার প্রতিযোগিতায় সামিল হয়েছেন জেডি ভান্স।

তবে তার রাজনৈতিক ময়দানে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি ভান্সের অতীতের সমালোচনা। কারণ ওহাইয়োতে রিপাবলিকানদের সমর্থকের সংখ্যা বেশ উল্লেখযোগ্য। সেই সময় তার একাধিক বিতর্কিত মন্তব্যের ক্লিপিং আবার সামনে এসেছে।

 বিতর্ক

কোনো প্রমাণ ছাড়াই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে হাইতিয়ান অভিবাসীদের খাদ্য হলো পোষা প্রাণী। সেই গুজব বিশ্বাস করেছিলেন ভান্স। এই একই বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেছিলেন ট্রাম্পও। এই শহর ভান্সের নিজের শহর ওহাইয়ো থেকে খুব দূরে নয়।

সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গে ভান্স বলেছিলেন, ‘একটা গল্প তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন তিনি (ট্রাম্প)… মিডিয়া আসলে আমেরিকান জনগণের দুর্ভোগের দিকে মনোযোগ দেয়।’ তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, তার নির্বাচনি এলাকার বাসিন্দারা হাইতিয়ান অভিবাসীদের পোষ্য প্রাণী খাওয়ার বিষয়ে তাকে বলেছিলেন। যদিও এই বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর জন্য তার সেনেট অফিসকে অনুরোধ করা হলেও তাদের তরফে সাড়া মেলেনি।

২০১৯ সালে গর্ভাবস্থার ১৫ সপ্তাহের পরে গর্ভপাত সম্পর্কিত দেশব্যাপী নিষেধাজ্ঞার পক্ষে সমর্থন প্রকাশ করেছেন জেডি ভান্স।
তবে সম্প্রতি তিনি এই বিষয়ে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করেছেন। তিনি বলেন, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে স্টেটগুলো।

ভান্স জানিয়েছেন, কংগ্রেস যদি গর্ভপাত নিষিদ্ধ করে তবে ট্রাম্প দেশব্যাপী গর্ভপাত নিষেধাজ্ঞায় ভেটো দেবেন। এই মন্তব্যের জন্য ট্রাম্পের কাছ থেকে তার কপালে তিরস্কার জুটেছিল। প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জেডির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করিনি। আমি মনে করি না এই নিয়ে তার যদি কোনো দৃষ্টিভঙ্গি থেকে থাকে তাহলে তা আমার চিন্তাকে প্রতিফলিত করবে। উনি আমার হয়ে কথা বলছিলেন না।’

নির্বাচনি সমাবেশগুলোতে ভান্স সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন যা অনেকাংশেই কমালা হ্যারিসের প্রচারাভিযান এবং তার সতর্কভাবে পরিকল্পিত মিডিয়া কৌশলের বিপরীত। কিন্তু অভিবাসীদের প্রতি ভান্সের কট্টরপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার পর থেকেই তিনি ওহাইয়োর স্প্রিংফিল্ডে হাইতিয়ান অভিবাসীরা পোষা কুকুর-বেড়াল খেয়ে ফেলছে বলে যে গুজব রটেছিল, তার সমর্থনে বারবার মন্তব্য করেছেন।

ভান্সের পুরনো সাক্ষাৎকারের বিভিন্ন মন্তব্যও আরো একবার সামনে এসেছে যেখানে তিনি গর্ভপাতের উপর দেশব্যাপী নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন বা যুক্তরাজ্যকে ‘ইসলামপন্থী দেশ’ বলে অভিহিত করেছিলেন। ওই তালিকায় তার তিন বছর আগের ‘সন্তানহীন ক্যাট লেডি’ সম্পর্কিত বিতর্কিত মন্তব্যও রয়েছে যেখানে তিনি মিজ হ্যারিসের প্রসঙ্গও টেনে এনেছিলেন। সেই মন্তব্য নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। শেষপর্যন্ত এই বিষয়ে সাফাইও দিতে হয়েছে তাকে।

জনমত জরিপ বলছে এই বিতর্কই জেডি ভান্সকে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে কম জনপ্রিয় ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের একজন করে তুলেছে। অর্থনীতি সম্পর্কে তার পপুলিস্ট বার্তাও ভোটারদের বিভ্রান্ত করেছে বলে মনে করা হয়। এটা কিন্তু এমন একটা ইস্যু যাকে ট্রাম্পের শিবির শক্তি হিসেবে দেখে এসেছে।

লেখক

ভান্সকে জনপ্রিয় করে তোলে ‘হিলবিলি এলেজি’ নামক স্মৃতিকথা। সর্বাধিক বিক্রি হওয়া বইয়ের তালিকায় রয়েছে তার লেখা ‘হিলিবিলি এলেজি’। এই বইয়ের অবলম্বনে ছায়াছবিও তৈরি হয়েছে। নেটফ্লিক্সে দেখা যেতে পারে এই সিনেমা।

ভান্সের লেখনীতে উঠে এসেছে, অ্যাপেলেচিয়া অঞ্চলের কথা যেখানে তার পরিবারের সদস্যরা থাকতেন। এই বিশাল পার্বত্য অঞ্চল যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলের বিরাণ এলাকা থেকে শিল্পন্নোত মধ্য-অঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বের প্রান্ত পর্যন্ত প্রসারিত। এই অংশে দেশের কয়েকটা দরিদ্রতম এলাকাও রয়েছে।

‘হিলবিলি এলেজি’-তে ভান্সের বেড়ে ওঠা, তার চারপাশের পরিস্থিতি, বন্ধু ও পরিজনদের ভুল সিদ্ধান্ত আর অন্যান্য সমস্যা মোকাবেলা করার অভিজ্ঞতার কথা ফুটে উঠেছে। রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই তিনি বর্ণনা করেছেন কীভাবে তার পরিচিত মানুষেরা পরিশ্রম করার বদলে সরকারি অনুদানের ওপর নির্ভর করতেন।

এই বইয়ের সাফল্য তাকে লেখক হিসাবে বিখ্যাত করে তোলার পাশাপাশি,ভাষ্যকার হিসাবেও পরিচিতি দিয়েছিল। বিভিন্ন নামকরা অনুষ্ঠানে ভাষ্যকার হিসাবে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হতো। তিনি সেখানে মূলত শ্বেতাঙ্গ শ্রমজীবী এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের বিষয়ে কথা বলতেন। সেই সময়, তৎকালীন রিপাবলিকান পার্টির মনোনীত প্রার্থী ট্রাম্পের সমালোচনা করার সুযোগ খুব কমই হাতছাড়া করতেন তিনি।

২০১৬ সালের অক্টোবরে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এই নির্বাচন সত্যিই নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, বিশেষত শ্বেতাঙ্গ শ্রমিক শ্রেণির ওপর। এটা (তৎকালীন নির্বাচন) মানুষকে অন্যদের দিকে আঙুল তোলার অজুহাত দিচ্ছে, তা সে মেক্সিকান অভিবাসী হোক, চীনা বাণিজ্য বা অভিজাত ডেমোক্র্যাট হোক বা অন্যরা।’

গাজা-ইউক্রেনসহ অন্যন্য ইস্যু

উক্রেনকে সহায়তার ক্ষেত্রে সংশয় প্রকাশ করেছেন ভান্স। ডেমোক্র্যাটিক নেতৃত্বাধীন চেম্বারে তার সংক্ষিপ্ত মেয়াদের কারণে, তার অনুমোদন করা বিল খুব কমই এগিয়ে গেছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নীতি পরিবর্তনের বদলে ‘বার্তা পাঠানোই’ এই বিলগুলো উপস্থাপনের পিছনে উদ্দেশ্য ছিল বলে মনে করা হয়।

এদিকে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গাজায় চলমান যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখানো হয়েছে এমন কলেজ এবং অনিবন্ধিত অভিবাসীদের নিয়োগকারী কলেজের জন্য ফেডারেল তহবিল থেকে যাওয়া টাকা আটকে দেওয়ার জন্য বিল উপস্থাপন করেছিলেন। গত মার্চ মাসে এমন এক আইনের অনুমোদন করেছিলেন তিনি যেখানে বলা হয়েছিল, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আইন অনুসরণ না করলে চীন সরকারকে মার্কিন মূলধন বাজার থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে।

গত জুলাইয়ে ন্যাশনাল কনজারভেটিজম কনফারেন্সে এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘আমেরিকান গণতন্ত্রের জন্য আসল হুমকি হলো আমেরিকান ভোটাররা অভিবাসন কমানোর পক্ষে ভোট দিচ্ছে এবং আমাদের রাজনীতিবিদরা আমাদের আরো সংখ্যক অভিবাসিতদের নিয়ে এসে আমাদের পুরস্কৃত করে চলেছেন।’

তিনি আরো বলেন,‘আমেরিকান ড্রিম’ ধারণার মূল কথাই হলো ‘যে দেশকে আপনি নিজের বাড়ি বলে চেনেন, সেখানে আপনি নিজের এবং আপনার পরিবারের জন্য একটা ভাল জীবন গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন’ যা ‘বামপন্থীরা অবরুদ্ধ’ করে রেখেছে।

ইউক্রেন ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সম্পর্কে তার মত ছিল, ‘এই বিষয়ে কোনো উপসংহার নেই যেদিকে আমরা যাচ্ছি বা ইতিমধ্যে অর্জন করেছি বলে দাবি করতে পারি।’ ওই একই সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন যে অভিবাসনের কারণে যুক্তরাজ্য ‘তেমন ভাল অবস্থায় নেই’ এবং দাবি করেছিলেন যে লেবার পার্টির নেতৃত্বে ওই দেশ ‘প্রথম সত্যিকারের ইসলামপন্থী দেশ’ হয়ে উঠবে যাদের হাতে পারমাণবিক বোমাও আছে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন