বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যম টেলিগ্রামের সিইও পাভেল দুরভের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়েছে এবং তিনি ফ্রান্স ত্যাগ করতে পারবেন না।
খবরে বলা হয়েছে, দুরভের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করা হয়েছে মানে তিনি দোষী এবং তাকে বিচারের মুখে পড়তে হবে এমন নয়। এর অর্থ হলো, কর্তৃপক্ষ মনে করছে, তার বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ আছে, তাই তাকে বিচারবিভাগীয় তত্ত্বাবধানে রাখা যায়। বিচারকরা তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগ জারি করেছেন।
দুরভ রাশিয়া ও ফ্রান্সের নাগরিক। কর্তৃপক্ষ তাকে জামিনের জন্য ৫০ লাখ ইউরো জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে এবং সপ্তাহে দুইবার তাকে থানায় হাজিরা দিতে হবে। দুরভকে বুধবার পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্তি দিয়ে আদালতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
কেন আনুষ্ঠানিক তদন্ত?
কর্তৃপক্ষের সন্দেহ, দুরভ তার বিরুদ্ধে আনা অপরাধমূলক কাজকর্ম নিয়ে কর্তৃপক্ষকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছেন না। তার বিরুদ্ধে মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে অপরাধমূলক কাজ করার অভিযোগ আছে।
দুরভের আইনজীবী ডেভিড অলিভিয়ার কামিনস্কি ফরাসি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, একটি সামাজিক নেটওয়ার্কের দায়িত্বে থাকা মানুষের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ অবিশ্বাস্য। কারণ, এই ধরনের কাজের সঙ্গে তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত নন।
সরকারি আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এই পর্যায়ে দুরভ হলেন এই মামলায় একমাত্র জড়িত ব্যক্তি।
৩৯ বছর বয়সি দুরভকে প্যারিস বিমানবন্দর থেকে গত শনিবার গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, টেলিগ্রাম মাদক পাচার, জালিয়াতি, বাচ্চাদের বিরুদ্ধে অপরাধের সঙ্গে জড়িত।
গ্রেপ্তারের পর তাকে ৯৬ ঘণ্টার পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। ফরাসি আইন অনুসারে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার আগে সর্বোচ্চ ৯৬ ঘণ্টা পুলিশি হেফাজতে রাখা যায়।
দুরভকে গ্রেপ্তার করার পর রাশিয়ার সরকারি কর্মকর্তারা বলেন, এটা রাজনৈতিক দিক থেকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এই ঘটনা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলির দ্বিচারিতাও সামনে নিয়ে এসেছে বলে তারা অভিযোগ করেছিলেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ‘দুরভের গ্রেপ্তারি কোনো রাজনৈতিক কারণে হয়নি, এটা স্বাধীনভাবে করা তদন্তের অঙ্গ।
ইলেকট্রনিক ফ্রন্টিয়ার ফাউন্ডেশনের সাইবার সিকিউরিটির ডিরেক্টর ইভা গালপেরিন ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, এই গ্রেপ্তারি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর আঘাত কিনা, তা বলার অবস্থা এখনো আসেনি। টেলিগ্রামের বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ আছে। তবে কেউই নির্দিষ্ট করে কোনো অভিযোগ করেনি।