বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। স্থানীয় সময় বুধবার রাতে কড়া নিরাপত্তায় আমেরিকায় পৌঁছায় জেলেনস্কিকে বহনকারী বিমান।
আকাশযাত্রায় রুশ যুদ্ধবিমানের হামলা এড়ানোর জন্য যাত্রপথের নজরদারিতে ছিল ন্যাটো জোটের গুপ্তচর বিমান। আমেরিকার যুদ্ধবিমান ‘আগলে নিয়ে’ যায় তাকে। ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর এটিই জেলেনস্কির প্রথম বিদেশ সফর।
পশ্চিমা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি, আমেরিকার বিমান বাহিনীর বোয়িং সি-৪০ প্লেনে ওয়াশিংটন পৌঁছান জেলেনস্কি। তার বিমানযাত্রার একাংশ ছিল কৃষ্ণসাগরের রুশ নিয়ন্ত্রিত পানিপথের অদূরে। সেখানে নিয়মিত টহল রয়েছে রুশ নৌবাহিনীর ডুবোজাহাজের। তাই আমেরিকার বিমানবাহিনীর এফ-১৫ যুদ্ধবিমানের পাহারায় নিয়ে যাওয়া হয় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বিমানকে। পোল্যান্ড, জার্মানি এবং উত্তর ইংল্যান্ডের আকাশসীমা পার হয়ে আমেরিকায় পৌঁছান জেলেনস্কি।
সেখানে গিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণও দেন তিনি। সাক্ষাৎ করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গেও।
এদিকে, মার্কিন কংগ্রেস অধিবেশনে জেলেনস্কির বক্তৃতার কয়েক ঘণ্টা পরই পুতিন শুক্রবার বলেন, “যুদ্ধের তীব্রতা বাড়ানো আমাদের লক্ষ্য নয়। আমরা চাই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে। আমরা এই যুদ্ধ শেষ করার জন্য যত দ্রুত সক্রিয় হব, ততই ভাল।”
ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য শুক্রবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরাসরি দুষেছেন পুতিনকে। কংগ্রেসে জেলেনস্কির বক্তৃতার আগে হোয়াইট হাউসে মুখোমুখি হয়েছিলেন দুই শীর্ষ নেতা। সেখানে বাইডেন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমেরিকার সমর্থন থাকবে ইউক্রেনের সঙ্গেই। ইউক্রেনবাসীর ও সে দেশের সেনাবাহিনীর অনমনীয় মনোভাবেরও প্রশংসা করেন বাইডেন।
এর পাশাপাশি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উদ্দেশে বাইডেন বলেছেন, “উনি ভাবছেন, ন্যাটো ভেঙে দিতে পারবেন। পশ্চিমা বিশ্বকেও। উনি ভাবছেন, ইউক্রেনবাসী হয়তো তাকে স্বাগত জানাবেন। উনি ভুল ভাবছেন।”
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। দীর্ঘ ১০ মাস ধরে চলছে এই যুদ্ধ। রুশ বাহিনী ইতোমধ্যে ইউক্রেনের বেশ কিছু অঞ্চল দখলে নিয়েছে। তবে পশ্চিমাদের অস্ত্র সহায়তায় ওইসব এলাকা উদ্ধারে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন।
সম্প্রতি রুশ বাহিনী ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা জোরদার করেছে। প্রবল এই হামলার মাঝেই আমেরিকা সফরে গেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি।