জর্ডানের একটি মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় তিন মার্কিন সেনার নাম প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা হলেন- সার্জেন্ট উইলিয়াম জেরোমি রিভারস (৪৬), বিশেষজ্ঞ কেনেডি ল্যাডন স্যান্ডার্স (২৪) ও বিশেষজ্ঞ ব্রিওনা অ্যালেক্সান্ড্রিয়া মাফেট (২৩)।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোরে জর্ডানে মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইরাকের ‘ইসলামিক রেজিট্যান্স’ নামক একটি প্রতিরোধ গোষ্ঠী। এতে ওই তিন মার্কিন সেনা আহত হওয়ার পাশাপাশি অন্তত ৪০ জন আহত হন।
ইসলামিক রেজিস্ট্যানস দাবি করেছে, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইল হত্যাযজ্ঞের জবাব হিসেবে চারটি মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে তারা। গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরু হওয়ার পর, রোববারই মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এই হামলার জন্য ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করেছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের দাবি, এসব ইসলামিক প্রতিরোধ গোষ্ঠী ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহকে অনুসরণ করছে।
এদিকে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কোনো যুদ্ধ চায় না বলেও জানিয়েছে পেন্টাগন। দপ্তরটির মুখপাত্র সাবরিনা সিং বলেছেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, তবে আমরা ব্যবস্থা নেব ও আমাদের সেনাবাহিনীর ওপর চালানো হামলার জবাব দেবো।
সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, জর্ডানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে হামলায় ব্যবহৃত ড্রোনটি ইরানের তৈরি বলে মনে হচ্ছে বলে দাবি করেছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ড্রোনটি ইরানের ‘শাহেদ ড্রোনের’ মতো। একই ড্রোন ইউক্রেনে ব্যবহারের জন্য রাশিয়াকে দিয়েছে ইরান।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইরান। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) বার্তা সংস্থা আইআরএনকে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানির বলেন, আমরা আগেও বলেছি, এখনো বলছি, বিরোধী গোষ্ঠীগুলো এই অঞ্চলে সংঘটিত গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে কাজ করে। তবে তারা ইরানের সরকারের আদেশে চলে না।
বিবিসি বলছে, গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে নতুন সব সহিংসতা দেখা গেছে, যা এই অঞ্চলে চলমান অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। একদিকে, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ ও অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইসরায়েলে বিরুদ্ধে ‘ইরান-সমর্থিত’ সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর (হুথি, হিজবুল্লাহ, হামাস) প্রতিরোধ পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল করে তুলছে।