এবার যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকের নিশানায় সেই জর্জ ফ্লয়েডের চার বছরের নাতনি। অভিযোগ উঠেছে, গত ১ জানুয়ারি নিজের ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় খুদে আরিয়ানা ডিলানের বুক-পেট ফুঁড়ে বেরিয়ে গেছে গুলি। এনবিসি নিউজু এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
তার পরিবার বলছে, প্রাণ বাঁচাতে তার জটিল অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। তাদের পরিবারকে নিশানা করা হয়েছিল। এটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত হামলা। খবর পেয়েও অনেক দেরিতে এসেছে পুলিশ। পুলিশের এ ধরনের আচরণ নিয়ে ক্ষুব্ধ জর্জ ফ্লয়েডের পরিবার।
জানা গেছে, আরিয়ানা ডিলানের বয়স মাত্র চার বছর। নববর্ষের প্রথম রাতে টেক্সাসে বাড়ির তিন তলায় নিজের ঘরে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুমোচ্ছিল সে। রাত ৩টার সময় রক্তাক্ত অবস্থায় জেগে ওঠে। তার কান্না শুনে পরিবারের অন্য সদস্যরাও জেগে যায়।
আরিয়ানার দাবি, তাকে মারা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। জটিল অস্ত্রোপচার করে প্রাণ বাঁচানো হয় আরিয়ানার।
হামলা প্রসঙ্গে আরিয়ানার বাবা ডেররিক ডিলানের দাবি, প্রথমে আমিও বিশ্বাস করিনি। পরে মেয়েকে রক্তাক্ত দেখে বিশ্বাস হয়। সে জানে না কী হয়েছিল, কারণ সে ঘুমাচ্ছিল।
তার দাবি, ফ্লয়েডের আত্মীয়দের নিশানা করা হচ্ছে। রাত ৩টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটলেও সকাল ৭টা পর্যন্ত পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এই অভিযোগ প্রসঙ্গে হিউস্টন পুলিশ প্রধান টনি ফিনার বলেছেন, পুলিশ দেরিতে পৌঁছেছে বলে খবর পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে পুরো বিষয়টি। বাচ্চা মেয়েটি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক এই কামনা করি। আমরা ওর পরিবারের পাশে আছি। দ্রুত দোষীকে খুঁজে বের করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা গিয়েছিল, মিনিয়াপোলিস পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চাওভিন হাঁটু দিয়ে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের শ্বাসরোধ করে রেখেছেন। জর্জ ফ্লয়েড বারবার অনুরোধ করছিলেন চাওভিনের কাছে যে, তিনি শ্বাস নিতে পারছেন না।
কিন্তু চাওভিন হাঁটু সরাননি। প্রায় সাড়ে ৯ মিনিট এভাবে থাকার পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ফ্লয়েড। এর পর পুরো বিশ্বে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন শুরু হয়। সেই চাপে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার ২০ বছরের জেল হয়।
উল্লেখ্য, আরিয়ানার দাদি লাটনিয়া সম্পর্কে জর্জের বোন হন। ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনে পরিবারের সঙ্গে অংশ নিয়েছিল খুদে আরিয়ানাও। অনেকের ধারণা, সেই বদলা নিতেই কি এই হামলা।