শ্রীলঙ্কায় প্রায় দুই সপ্তাহ পর জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়া হয়েছে। নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটের জেরে সৃষ্ট অব্যাহত বিক্ষোভ সামাল দিতে দ্বীপ দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের অব্যাহত বিক্ষোভের মধ্যেই উঠল জরুরি অবস্থা।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে গত ৬ মে মধ্যরাতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন, যা গত শুক্রবার মধ্যরাতে তুলে নেওয়া হয়।
সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যে এক মাসের মধ্যে দুইবার জরুরি অবস্থার ঘোষণা দিতে হয় তাঁকে।
প্রেসিডেন্টের দপ্তরের ঘোষণা অনুযায়ী, শুক্রবার মধ্যরাত থেকেই জরুরি অবস্থা উঠে যায়। দেশব্যাপী আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে উন্নতির দিকে যাওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।
বিক্ষোভের শুরু থেকে আন্দোলনকারীরা উদ্ভূত সংকটের জন্য দেশের প্রভাবশালী শাসক রাজাপক্ষে পরিবারকে দায়ী করে আসছে। মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানিসংকট, ওষুধসংকট ও বিদ্যুৎ ঘাটতিসহ নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে জনগণ। বিক্ষোভ তীব্র রূপ ধারণ করার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে মাহিন্দা রাজাপক্ষে পদত্যাগ করলেও তাঁর ভাই গোতাবায়া এখনো প্রেসিডেন্ট পদে অটল। বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ তাঁরও পদত্যাগ চাচ্ছে।
গোতাবায়ার পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে পুলিশের টিয়ার গ্যাস ও জলকামান নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে নিত্যদিন। শনিবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজধানী কলম্বোর সুরক্ষিত এলাকায় ঢুকে বিক্ষোভ করলে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে বলপ্রয়োগ করে।
এদিকে অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি পেতে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো অগ্রগতি হয়নি। আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ঋণদাতাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে নতুন সরকার। অনেক দেশ বিশেষ সহায়তা ও ত্রাণ দিচ্ছে শ্রীলঙ্কাকে। তবে নতুন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে এখনো অর্থমন্ত্রী হিসেবে কাউকে নিয়োগ দিতে পারেননি। সে কারণে বহির্বিশ্বের সঙ্গে আর্থিক বিষয় নিয়ে আলোচনা বিলম্বিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
এর মধ্যে শ্রীলঙ্কার অন্যতম সহযোগী দেশ চীন জানিয়েছে, তারা শ্রীলঙ্কার ঋণ নিষ্পত্তির জন্য ব্যাংকগুলোকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে এবং ঋণের বোঝা কমাতে সংশ্লিষ্ট দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে ইতিবাচকভাবে কাজ করবে।
শুক্রবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, চীন শ্রীলঙ্কার বৈরী পরিস্থিতি ও চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত। মুখপাত্র বলেন, চীন শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত রয়েছে।