হিনা রাব্বানি খার, পাকিস্তানের বর্তমান নতুন মন্ত্রিসভার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। এবার প্রতিমন্ত্রী হলেও সুন্দরী হিনা বছর দশেক আগে ২০১২ সালে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। আর বর্তমানে ওই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রী পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো।
যখন ২০১২ সালে হিনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তখন ২৪ বছরের তরুণ বিলাওয়াল। সে সময় হিনার বয়স ছিল তার চেয়ে ১১ বেশি। ওই সময় এই দুজনের অসম প্রেম-রোমান্স নিয়ে মুখরোচক গল্প ঘুরে ফিরেছে গোটা এশিয়ায়।
গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ‘দ্য ব্লিটজ ট্যাবলয়েড’ জানিয়েছিল, হিনা ও বিলাওয়ালকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ভবনের ভেতরে আপত্তিজনক অবস্থায় শনাক্ত করেছিলেন তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি।
প্রেসিডেন্টের ছেলে হিসেবে বিলাওয়াল তখন ওই ভবনেই থাকতেন। কিন্তু সে সময় ঘটনাটি চেপে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্টের লোকজন। শুধু তাই নয়, লন্ডন এবং দুবাইয়ে তাদের যৌথ ভ্রমণের গল্পও ছড়িয়েছে মিডিয়ায়। সেই পুরোনো প্রেম চাঙ্গা করার সুবর্ণ সুযোগ এখন হিনা-বিলাওয়ালের হাতের মুঠোয়। সত্যি তাদের মধ্যে এমন সম্পর্ক যদি থাকে, তবে পররাষ্ট্রেই শুরু হলো হিনা-বিলাওয়ালের ‘নতুন সংসার’।
শাহবাজ শরিফের সরকারে আগেই পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন সুন্দরী হিনা রাব্বানি। আর একই মন্ত্রণালয়ে পূর্ণ মন্ত্রী হয়ে পুরনো প্রেম ঝালাইয়ের সুযোগ পেয়েছেন কথিত প্রেমিক বিলাওয়াল। পাকিস্তানের ফেডারেল মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো। বুধবার প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি আইওয়ান-ই-সদরে বেনজির-তনয়কে শপথ বাক্য পাঠ করান।
সুদর্শন এই তরুণ রাজনীতিবিদকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জুলফিকার আলী ভুট্টোর পর ৩৩ বছর বয়সি বিলাওয়াল হবেন পরিবারের দ্বিতীয় সদস্য যিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দেশকে সেবা দেবেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ও অন্যান্য অতিথিদের পাশাপাশি শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হিনা রাব্বানিও।
পাকিস্তান পিপলস পার্টির সদস্য হিনা রাব্বানির সঙ্গে বেনজির তনয়ের প্রেম-রোমান্স নিয়ে ২০১২ সালে রিপোর্ট করেছিল ভারত ও বাংলাদেশের ট্যাবলয়েডগুলো। হিনা রাব্বানি বিয়ে করেছিলেন পাকিস্তানের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ফিরোজ গুলজারকে। তাদের ঘরে আন্নায়া এবং দিনা নামে দুটো মেয়েও রয়েছে। এ সময় বিলাওয়ালকে স্বামী হিসেবে পেতে নাকি মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন হিনা।
গুঞ্জন রয়েছে, বিলাওয়ালকে পেতে স্বামী ফিরোজের ঘর ছাড়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। এমনকি ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছিলেন এই সরকারি কূটনীতিক। এ সময় স্বামী ফিরোজকে নিয়েও নানা সন্দেহমূলক বক্তব্য দেন হিনা। এসব গল্প নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের সোশ্যাল মিডিয়া ছিল সরগরম। কেউ কেউ বলেছেন হিনা-বিলাওয়ালের বিয়ে হওয়া উচিত। পাকিস্তানের আলেমরা তাদের ‘অবৈধ’ সম্পর্ক নিয়ে ফতোয়া দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। উভয়ের পারিবারিক চাপে তাদের সম্পর্ক চলে যায় লোকচক্ষুর অন্তরালে।
ওই সময়ে হিনা এবং তার স্বামীর সম্পর্কে গুজব এবং কেলেঙ্কারি ছড়ানোর ঘটনাকে আইএসের ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছে হিনার পরিবার।
ট্যাবলয়েড দাবি করেছে, জারদারির অসন্তোষ থেকে হিনা ও তার স্বামীকে বাঁচানোয় হাত ছিল বিলাওয়ালের। গ্যালাক্সি টেক্সটাইল মিলের ৭ কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল কেলেঙ্কারির খবর ছড়িয়ে পড়েছিল সেই সময়ে-যেটির মালিক হিনার স্বামী ও তার শ্বশুর। হিনাকে টার্গেট করায় বাবার প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন বিলাওয়াল। এ সময় বিলাওয়াল তার বাবাকে হুমকি দিয়েছিলেন, তিনি পিপিপি চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন।
ব্লিট্জ ট্যাবলয়েডের এসব গুঞ্জন এখন পুরনো হলেও নতুন কোনও গল্পের শুরু হতে যাচ্ছে কি না, তা নিয়ে আবারও গুঞ্জন শুরু হয়েছে। পররাষ্ট্র বিভাগের দায়িত্ব পালন করতে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে বিভিন্ন দেশ সফরে যেতে হবেই। আর সেই ফাঁকে নতুন করে পুরোনো গল্প কিংবা ‘নতুন সংসার’ চালু হবে কি না, এমন সন্দেহ এখন অনেকের।