মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফরেনসিক শিল্পী লোইস গিবসন। যিনি টেক্সাসের হিউস্টন পুলিশ বিভাগে কাজ করেন। অজ্ঞাত অপরাধীদের ছবি আঁকাই তার কাজ। লোইস গিবসন তার কর্মজীবনে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে অপরাধীর চেহারার বর্ণনা শুনে ছবি এঁকে চলেছেন। তার আঁকা ছবির মাধ্যমেই এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৩১৩ জন অপরাধীকে ধরতে সক্ষম হয়েছে মার্কিন পুলিশ।
এই অসামান্য কাজের জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড অব রেকর্ডসেও নাম উঠেছে লোইস গিবসনের। অসংখ্য মানুষের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করেছেন তিনি। ২১ বছর বয়সে নিজেই এক সিরিয়াল কিলারের আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। সম্প্রতি ইতালীয় একটি টিভি সিরিজে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জানা গেছে, গিবসন ছোটবেলা থেকেই নাচে খুব ভালো ছিলেন। চারুকলায় ডিগ্রি অর্জনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এ সময় তিনি বিভিন্ন বিজ্ঞাপন এবং সংস্থার হয়ে মডেলিং করতেন। কিন্তু তার সব আনন্দ এবং সাজানো জীবন যেন এক পলকেই শেষ হয়ে যায়। ২১ বছর বয়সে তিনি একজন সিরিয়াল কিলার এবং ধর্ষকের লক্ষ্যবস্তু হন।
সেই সিরিয়াল কিলার গিবসনকে অনেক অত্যাচার করেছিল। এক সময় তাকে মৃত ভেবে ফেলে চলে যায়। তখন গিবসনের চোখ ও গলা থেকে রক্ত পড়ছিল। কিন্তু ভাগ্যক্রমে সেদিন বেঁচে যান তিনি। এরপর লোইস লস অ্যাঞ্জেলেস ছেড়ে হিউস্টনে চলে যান। যেখানে তিনি চাকরির জন্য পুলিশের কাছে যান। যেহেতু তিনি চারুকলার ছাত্রী ছিলেন তাই খুব সহজেই একজনের পোর্ট্রেট আঁকতে পারতেন। নিজের হামলাকারীকে ধরিয়ে দিয়েছিলেন ছবি এঁকেই।
লোইস বুঝতে পারেন, তার আঁকা স্কেচে একজন অপরাধী শাস্তি পাবে, সেই সঙ্গে বেঁচে যাবে অনেক প্রাণ। তিনি নিজে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন। তিনি জানেন সেই সময়ের অনুভূতি। একজন বিকারগ্রস্ত সিরিয়াল কিলারের হাতে অত্যাচার সহ্য করা ও প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর ভয় কেমন হয়। তাই তিনি এভাবেই মানুষের পাশে থাকতে চেয়েছেন। ১৯৮২ সাল থেকে এই কাজের সঙ্গেই আছেন তিনি।