‘শূন্য কভিড’ নীতি থেকে রাতারাতি সরে যাওয়ার পর চীনের হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীর চাপ অনেক বেড়েছে। করোনা আক্রান্ত চিকিত্সাকর্মীদের পর্যন্ত ডেকে পাঠানো হয়েছে কর্মীর স্বল্পতা সামাল দেওয়ার জন্য।
স্বাস্থ্যনীতি নিয়ে কর্মরত চীনা অধ্যাপক চেন শি যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটি থেকে নিজ দেশের কভিড নীতির ওপর নজর রাখছেন। তিনি জানান, এত দিন কভিড আক্রান্ত হলে হাসপাতালে যাওয়ার নিয়ম থাকায় সবাই প্রথমেই ছুটছে হাসপাতালে।
অনেকে সামান্য উপসর্গ নিয়েও সেখানে হাজির হচ্ছে। এতে চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চেন শি বলেন, ‘মানুষ অসুস্থ বোধ করলেই হাসপাতালে ছুটছে, যা খুব সহজেই স্বাস্থ্যসেবা খাতকে বিপর্যস্ত করে ফেলতে পারে। ’
হাসপাতালগুলো দ্রুত নিজেদের জ্বরসংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। কিন্তু এর পরও রোগীর ঢল সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। চেন শির মতে, ভাইরাসে আক্রান্ত হলে যে বাসায়ও থাকা যাবে, তা মানুষকে বোঝাতে আরো পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
ওষুধ খাতেও দেখা দিয়েছে সংকট। গোটা দেশেই দ্রুত ফুরিয়ে আসতে দেখা গেছে ঠাণ্ডা ও জ্বরের ওষুধ। কভিড পরীক্ষার কিটও মিলছে না সহজে।
আক্রান্তরা যাতে সামান্য উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে না উপস্থিত হয়, সে জন্য ডাক্তাররাও সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সংক্রমণ বিস্ফোরণ সামাল দিতে কর্মকর্তারা কভিড নিভৃতবাস কেন্দ্রগুলোকে সাময়িক হাসপাতালে পরিণত করছেন।
চলতি সপ্তাহে বেইজিংয়ে শুধু এক দিনে ২২ হাজার মানুষ জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করেছে।
এদিকে বেইজিংয়ে রেস্তোরাঁ খোলা থাকলেও জনসমাগম কম দেখা গেছে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো কর্মীদের কাজে যোগ দিতে বললেও অনেকেই ফিরতে রাজি হচ্ছেন না।
মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই চীনের কভিডের চিত্র ছিল ভিন্ন। সরকারের কঠোর নীতি মেনে চলতে হচ্ছিল সবাইকে। সাম্প্রতিক গণপ্রতিবাদের মুখে কড়াকড়ি একরকম হুট করেই শিথিল করে সরকার। রাতারাতি শিথিল করার কারণেই হিতে বিপরীত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন চেন শি।